নরসিংদী প্রতিদিন,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: বিবর্তন পৃথিবীর জন্মের স্বভাব। কোটি কোটি বছর ধরে বিবর্তনের পথ পেরিয়ে পৃথিবী আজ বর্তমান পর্বে এসে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক প্রজাতির বিলুপ্তি সাধন হয়েছে। বিলুপ্ত প্রজাতির মধ্যে কিছু প্রজাতি আবার শত-সহস্র বছর পর টুকটাক দেখা দিয়েছে।
যোগ্যতমের টিকে থাকার এই পৃথিবীতে শেষ পর্যন্ত মানুষই নিজেকে উত্তম রূপে প্রমাণ করলো। এবং এখন পর্যন্ত সৃষ্টি দুনিয়ার সেরা অবস্থানে আছে মানব প্রজাতি।
কিন্তু সেই আধিপত্য বোধহয় আর বেশি দিন নয়। পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতি পৃথিবীকে নিয়ে যাচ্ছে বিপন্নতার নতুন এক অধ্যায়ে। নতুন যুগপর্বে যাদের সবচেয়ে বেশি বিলুপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে মনুষ্যপ্রজাতি তাদের মধ্যে প্রথম কাতারে।
একসময় দুনিয়ায় মানুষের প্রজাতিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পৃথবী সম্প্রসারণের এক পর্যায়ে যেভাবে একটি মহাবিস্ফোরণের পর পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত গিয়েছিল ডাইনোসর-যুগ, ঠিক তেমনই আরেকটি মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হবে মানবজাতি!
নতুন এক গবেষণা থেকে এমন আভাসই পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি সায়েন্স অ্যাডভান্সেস নামের এক গবেষণা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হলেও স্বাভাবিকের চেয়ে শতগুণ বেশি দ্রুততার সঙ্গে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে পৃথিবীর জীবপ্রজাতি। বিশেষত, মনুষ্য প্রজাতি।
নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আসন্ন মহাপ্রলয়ে উভচর শ্রেণির ৪১ শতাংশ এবং সমগ্র প্রাণিকুলের ২৬ শতাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণি হারিয়ে যাবে। এই তালিকায় মানুষের নামই রয়েছে সবার উপরের তালিকায়ই।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যানফোর্ড উডস ইনস্টিটিউট ফর দ্য এনভায়রনমেন্ট’র ফেলো পল এরলিচ জানান, এ পর্যন্ত পৃথিবীতে পাঁচবার মহাপ্রলয় ঘটেছে। শেষবার হয়েছিল ৬.৬ কোটি বছর আগে। তখন ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছিল। বর্তমানে ষষ্ঠ মহাপ্রলয়ের যুগে পৃথিবী ঢুকে পড়েছে।
তাদের আশঙ্কা, আসন্ন এই মহাপ্রলয়ে মানুষই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। আর তেমন হলে তা ফিরে পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েক লাখ বছর। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই একমত যে, ডাইনোসর-যুগে জীব-জগতের অবলুপ্তি যে হারে হতো এখন তার চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত হারে অবলুপ্তি হচ্ছে।
তবে এ তত্ত্বেরও বিরোধিতা করেছেন অনেক বিজ্ঞানী। বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের।