নরসিংদী প্রতিদিন: বছর ঘুরে আবারো এগিয়ে এসেছে নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা। সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এ বাউলের মেলা আয়োজন নিয়ে চলছে মহা ধুমধাম। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে ৬শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউলের মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যার যার দোকান বরাদ্দ নিতে শুরু করেছেন। বাউল ভক্ত সাধুরা যার যার আসনের জায়গা বাছাইয়ে নেমে পড়েছে। নরসিংদীর মেঘনার তীরে অবস্থিত বাউল ঠাকুরের আখড়া ধামকে ঘিরে প্রতি বছর এই বাউলের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ভারত-নেপালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউল সাধকরা এ মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু এই মেলা দেখতে আসে। আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, মেলার তৃতীয় দিন ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মাঘী পূর্ণিমায় শ্রী শ্রী বাউল ঠাকুরের মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। মেলার উদ্যোক্তা ডা. সাধন বাউল, মৃদুল বাউল মিন্টু ও প্রাণেশ বাউল ঝন্টু এই মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সার্বক্ষণিক তদারকি করবেন। কখন এই মেলা শুরু হয়েছিল তার নির্ধারিত কোন তারিখ বা সাল জানা যায়নি। তবে ব্রিটিশ শাসনামলেরও পূর্ব থেকে নরসিংদীর মেঘনার তীরে এই বাউলের মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে মেলার আয়োজনকারীরা জানান। কমবেশী ছয়শত বছরের এই পুরনো মেলায় গ্রাম বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক বাঙালির যুগযুগের সংস্কৃতিকে ঘিরে এই মেলা আয়োজিত হয়। এই মেলায় আনা হয় বাঙালির যুগযুগের কৃষি উপকরণ, কৃষি পণ্য, কৃষিজাত দ্রব্য, গৃহের আসবাবপত্র, গৃহস্থালির তৈজসপত্র, মাটির তৈরি জিনিসপত্র, খেলনা, বিভিন্ন ধরনের মিষ্ট দ্রব্য, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দ্রব্য, বিশেষভাবে ঢেঁকি, গাইল, ছেহাইট, চঙ্গ, লাঙ্গল-জোয়াল, উমবাড়ী, লাঙ্গলের ঈশ, লাঙ্গলের ফাল, আঁচড়া ইত্যাদি কৃষি উপকরণ। শীতল পাটি, হুগলা, মাদল, চাটাই, গ্রাম্য খাবার, জিলাপি, কদমা, তিলের নাড়ু, নারকেলের নাড়ু, কাঠ গজা, রস গজা, নিমকি, কটকটি, ছোলা ভাজা, মটর ভাজা, গুমনি, ঝালমুড়ি, খিড়াই, শসা, কাঠের তৈরি বিভিন্ন সাংসারিক জিনিসপত্র, ছোট ছেলে মেয়েদের পোশাক, মহিলাদের শাড়ি, থ্রি পিসসহ পোশাকাদি, পুরুষের লুঙ্গী, পায়জামা, পাঞ্জাবী, শার্ট, প্যান্ট, কোট, বিছানার চাদর, বালিশ, শিমুল তুলা, শলার ঝাড়ু, ছনের ঝাড়ু, বিভিন্ন জাতের মাছ, মুরগী, হাঁস, এবং ছেলে মেয়েদের প্রাচীন খেলনা, বাঁশি ইত্যাদি।