নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীতে প্রতিপক্ষের গুলিতে শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাহাত সরকার (২৫) নিহত হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে জেলার মাধবদী থানার আব্দুল্লাহ বাজার ঈদগাহের নিকট থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সন্ত্রাসী রাহাতকে নরসিংদী থেকে ধরে নিয়ে উল্লেখিত স্থানে গুলি করে হত্যা করেছে বলে পুলিশের ধারণা।
নিহত রাহাত শহরের উত্তর সাটিরপাড়া এলাকার জর্সিম উদ্দিন সরকারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ১২ টার দিকে আব্দুল্লাহ বাজারের কয়েক জন ব্যবসায়ী গুলির শব্দ শুনে মাধবদী থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে মাধবদী থানার পুলিশ আব্দুল্লাহ বাজার এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজদের দেয়া তথ্য মতে ঈদগাহ সংলগ্ন স্থানে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়। পুলিশ নিহতের লাশ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরদিন রবিবার সকাল এগারটার দিকে সামাজিক মাধ্যমে নিহতের ছবি দেখে পরিবারের লোকজন নিহত যুবককে রাহাত সরকার সনাক্ত করে।
নিহতের মা নিলুফা বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছে, শনিবার রাত ১০ টার দিকে বাসা থেকে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রবিবার অনুষ্ঠিত যুবলীগের সম্মেলনের মঞ্চ সাজ-সজ্জার কাজের উদ্দেশ্যে নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে যায়। তারপর আর বাড়ী ফিরেনি। পরিবারের লোকজন রাতে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পায়। সকালে লোকমুখে শুনে হাসপাতালে গিয়ে রাহাতের লাশ সনাক্ত করে।
লক্ষ্য করা গেছে, রবিবার অনুষ্ঠিত যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে রাহাত সরকার নিজেকে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের কর্মী উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম নেওয়াজের পক্ষে শহরজুড়ে ফেস্টুন লাগিয়েছিল। ঘটনার পর দুপুরে নিহতের স্বজনরা নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঞা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জেলা যুবলীগের সম্মেলনে ছুটে এসে নেতাদের নিকট রাহাত হত্যার বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
পরিবারের লোকজন দাবী করেন, নিহত রাহাত জেলা যুবলীগের নবর্নিবাচিত সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজের সমর্থক ছিলেন। এবং সম্মেলনকে সামনে রেখে শামীম নেওয়াজের পক্ষে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষরা তাকে গুলি করে হত্যা করতে পারে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থল থেকে ৮টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহারে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৮টি গুলি লেগেছে। পুলিশের ধারণা, খুব কাছে থেকে এসব গুলি করা হয়েছে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, নিহত রাহাত সরকারের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর মডেল থানায় হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন আইনে ৫ থেকে ৬টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আমাদের ধারণা অতীত কৃতকর্ম কিংবা নিজেদের কোন্দলে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। এই ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।