1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

নরসিংদীর করিমপুরে মেঘনার কড়াল গ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন প্রায় ৩শতাধিক বসত ভিটা

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ২৪৪ পাঠক

লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন : নরসিংদীর করিমপুরের শুটকিকান্দা গ্রামে মেঘনার কড়াল গ্রাসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় তিন শতাধিক বসত ভিটা। বসত ভিটা ও ঘর হারিয়ে দিশেহারা পরিবারগুলো এখন চিড়া-মুড়ি খেয়ে অর্ধাহারে নৌকায় ও খোলা আকাশের নীচে রাত্রি যাপন করছে। নদীর এই অব্যাহত ভাঙ্গণে আতংকিত গ্রামবাসী। ভিটে-মাটি হারানো এই দিশেহারা মানুষগুলো এখনো পর্যন্ত সরকারী কোনো সহযোগিতা পায়নি।
নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের শুটকিকান্দা গ্রাম। ঈদ-উল-আযহার আগের দিন থেকে হঠাৎ করেই নদী ভাঙ্গণ শুরু হয়। গত কয়েক দিনের অব্যাহত নদী ভাঙ্গণের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় তিন শতাধিক বসত ভিটা। গ্রামের মানুষ মিলে অনেক চেষ্টার পরও ঘরের আসবাবপত্র কিছু উদ্ধার করতে পারলেও অধিকাংশই এখন নদীগর্ভে। সবকিছু হারিয়ে এখন দিশেহারা এই মানুষগুলো। অন্যের জমিতে তাবু গেরে, খোলা আকাশের নিচে ও নৌকাতে থাকতে পারলেও খাবারের অভাবে অসহায় জীবন যাপন করছে এই এলাকার মানুষ গুলো। সরকারী সহযোগিতার আশায় প্রায়ই নদী পথে তাকিয়ে থাকেন তারা।

এরই মধ্যে বর্তমান জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস এর নির্দেশে তাৎক্ষনিকভাবে সদর ইউএনও সেলিম রেজাসহ করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারিছ- নদী ভাঙ্গন কবলিত শুটকিকান্দি গ্রামটি পরিদর্শন করেন। এসময় চেয়ারম্যানের নিজস্ব তহবিল হতে নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত ৪২ টি পরিবারের মাঝে নগদ ১ হাজার টাকা ত্রাণ বিতরণ করেন। ভাঙ্গন কবলিতদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছে ইউএনও সেলিম রেজা। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের খাবার সংকট নিরসন সহ সরকারী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে পূর্ণবাসন ও অতিবিলম্বে স্থায়ীভাবে বেড়ীবাধে জোর দাবী জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
এলাকাবাসী কিবরিয়া গাজি বলেন, শুটকিকান্দি গ্রামে ধারাবাহিক ভাবে গত ১ সেটেম্বর থেকে নদী ভাংগন শুরু হয়েছে। এখানকার লোকজন অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরকারের কাছে আমাদের বিনিত অনুরোধ অতিবিলম্বে এখানে বেড়ীবাধে ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্ণবাসন করা হোক।
বিভিন্ন সময়ে এই ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনকারীদের বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস পেলেও এই ভাঙ্গণ থেকে স্থায়ী সমাধান সহ পুনর্বাসন চান তারা। দ্রুত এর স্থায়ী সমাধান করা না গেলে এই গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানান গ্রামবাসী।

ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ আশ্রাব উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষ খুব আতংকের মধ্যে আছে। সরকার যদি এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এই গ্রাম বিলিন হয়ে যাবে। আমরা সরকারের কাছে চাই আমাদেরকে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা এবং গ্রাম রক্ষার জন্য করনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ কামাল উদ্দিন বলেন, ভাঙ্গনের শিকার মেঘনা পাড়ের পরিবারগুলো এখন খুবই অসহায় অবস্থায় পতিত হয়েছে। তাদের ঘরে খাবার নেই। লোকজন গ্রাম থেকে যা কিছু খাবার সরবরাহ করছে তাই খেয়ে তারা কোন রকমে দিনাতিপাত করছে। সরকারী সাহায্য না পেলে পরিবারগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ নূরজাহান আক্তার বলেন, আমাদের গ্রাম নদীর সাথে মিছে গেছে। আমরা এখন অস্থায়া হইছি ঘর-বাড়ি কিছু নাই, খানা-দানা কিছু নাই, বছরের একটা ঈদ আসছে আমরা কোন আনন্দ করতে পারছিনা। আমরা পেটে দানা দিতে পারি নাই। আমরা এখন সহযোগিতা যদি নাই পাই তাহলে আমরা সাগরে ভাসব। ঘর-বাড়ি কাপড়-চোপড় কিছু নাই। মায়ার সাথে গ্রামে ঘুরতেছি। নদী আমার সব নিয়ে গেছে পড়ার জন্য একটা কাপড়ও নাই। অন্য পাড়া থেকে কাপড় এনে কাপড় পড়ছি।

সরকারীভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বরাদ্ধ থাকলেও তা এখনো বিতরণ করা হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের জন্য যা যা করা দরকার সব ব্যবস্থাই তাদের জন্য করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হারিছ মিয়া বলেন, পূর্ণবাসনের জন্য যা যা লাগে ঘর-বাড়ি এবং থাকা খাওয়া সহ সবার্ধিক সাহায্য সহযোগিতা আমরা করব। সরকারি ভাবেও আমার কাছে বরাদ এসেছে কিন্তু গতকাল থেকে আবারও ভাঙ্গন শুরুর কারণে আমরা বরাদ এখনও দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে যারা বিলিন হয়েছে তাদেরকে আমার পরিষদ থেকে ১ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
নরসিংদীর পানি উন্নয়ন বোডে নিবার্হী প্রকৌশলী মোঃ আবুল হোসেন বলেন, এখানে তাৎক্ষনিকভাবে সিনথেটিক বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে আগামী শুষ্ক মৌসুমে পনের কোটি উনিশ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬শত মিটার জায়গা স্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মানের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।

নরসিংদীর সদরের ইউএনও সেলিম রেজা বলেন, গত ৩-৪ দিনে করিমপুর ইউনিয়নের শুটকিকান্দি গ্রামে প্রচন্ড ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ গ্রামবাসীর সাময়িকভাবে সাহায্য করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগ্ন। সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙ্গন কবলিতদের পূনর্বাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

#



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD