নরসিংদী প্রতিদিন: পিতা-মাতার পারস্পরিক সন্ধিগ্ধ পরকীয়ার বধ (বলী) হয়েছে রায়পুরার মরজালের হতভাগ্য শিশু মাহিন। স্ত্রীকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে পরকীয়া প্রেম নির্বিঘ্ন করার জন্য ৮ মাসের শিশু পুত্রকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ব্লেড দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছে পিতা আপন মিয়া। এ কথা আপন মিয়া আদালত ও পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিতে বলেছে।
আপন মিয়ার স্ত্রী মারুফা আক্তারের দায়েরকৃত মাহিন হত্যামামলার এজাহারে আপন মিয়ার পরকীয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে গ্রেফতারকৃত খুনী পিতা আপন মিয়া বুধবার নরসিংদী আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে তার স্ত্রীর পরকীয়ার কথা উল্লেখ করেছে। তবে মারুফা তার এজাহারে আপনের পরকীয়া প্রেমিকার নাম উল্লেখ করেছে। পক্ষান্তরে আপন মিয়া তার স্বীকারোক্তিতে স্ত্রী মারুফার পরকীয়া প্রেমিকের নাম উল্লেখ করতে পারে নি। মারুফা বুধবার সন্ধ্যায় তার পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেছে। সে কথা বলার সময় পরকীয়ার বদনামের কথা শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সে জানায় তার স্বামী আপন মিয়া প্রায়ই ফোনে তার প্রেমিকার সাথে কথা বলতো। এ ব্যাপারে মারুফা, স্বামী আপন মিয়াকে বাধা দিলে আপন মিয়া, মারুফার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গালাগাল করতো। এ নিয়েই দু’জনের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এদিকে হত্যাকান্ডের ১৬ ঘন্টার মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে ঘাতক পিতা আপন মিয়া ধরা পড়ে গেছে। পুত্রকে হত্যা করার পর ঘাতক আপন মিয়া রায়পুরার শ্রীরামপুর বাজারে গিয়ে প্রথমে জনতা ও পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার রাতেই থানায় নিয়ে যায়। গ্রেফতারের পর আপন মিয়া পুলিশের নিকট পুত্রকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। সে জানায় যে, সে একজন বেকার, স্ত্রী-পুত্রের ভরন-পোষন করার ক্ষমতা তার নেই। এর মধ্যে তার স্ত্রীর সাথে কোন বনিবনা নেই। তার স্ত্রীর সাথে অন্য লোকের সম্পর্ক রয়েছে। এই সন্তান তার নয়। এই ধারণা থেকেই সে তার স্ত্রীকে ফাঁসানোর জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পুত্র মাহিনকে হত্যা করে। পুত্রকে হত্যা করার জন্য সে সোমবার বিকেলে একটি ব্লেড কিনে নিয়ে বিছানার নিচে রেখে দেয়। সকালে তার স্ত্রী মারুফা রান্না ঘরে গিয়ে মাছ কুটার সময় সে ব্লেড দিয়ে এক টানে পুত্র মাহিনের গলাকেটে ফেলে। যার ফলে সে চিৎকার দিতে পারেনি। পরে তার গলা দিয়ে গড়িয়ে পড়া রক্ত দেখে দেবর স্বপন মারুফাকে রান্না ঘরে গিয়ে জানায় যে, শিশু মাহিনের গলা দিয়ে রক্ত পড়ছে। আর তখনই মারুফা দৌড়ে গিয়ে শিশু পুত্রকে কোলে তোলে দেখতে পায় যে তার সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।