লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন: শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এম.এম.বি নামক একটি ইট ভাটা নদীর গর্ভে চলে গেছে। এর ফলে ইট ভাটার মালিকের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে । এই ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গার ভিরিন্দা এলাকায়। বুধবার গভীর রাতে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত এম.এম.বি নামক ইট ভাটাটি ভেঙে নদীর গর্ভে চলে যায়। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ইয়া রাব্বুল আলামিন নামক একটি ড্রেজার ও এর দুই স্টাফকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তার করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, কয়েক বছর ধরে যুবলীগ নেতা সোহাগ খন্দকার ভিরিন্দা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলনের কারণে ওই এলাকার ফসলি জমি ও ইটভাটা গুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে বালু তোলার কারণে গত কয়েক দিন ধরে নদীর পাড়ের ফসলি জমির মাটি ভেঙে নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নদীর তীরে অবস্থিত ইটের ভাটা গুলোও ভেঙে পড়ছে। এর সাথে আরো জড়িত পাশর্র্^বর্তী গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্থ ইট ভাটার মালিক মোরশেদুল হক ভূইয়া জানান, বালু তোলার কারণে গত কয়েকদিন ধরে ভাটার পাশে মাটি ভেঙে পড়তে দেখে বালু উত্তোলনকারী সোহাগ খন্দকারকে এখান থেকে বালু না তোলার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি আমার কোনো কথা না শুনে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলতে থাকেন। যার ফলে আমার ইট ভাটাটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এতে ভাটার দশ লাখ টাকার ইট, আশি লাখ টাকার কয়লাসহ দুই কোটি টাকার মালামাল পানিতে ডুবে যায়।
ভিরিন্দা গ্রামের মানিক মিয়া ও শেখ রুহুল আমিন নামে দুই ব্যক্তি জানান, নদীর পাশে তাদের দশ বিঘা জমি রয়েছে। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের কারণে তাদের প্রায় পাঁচ বিঘা জমির মাটি নদীতে তলিয়ে যায়। তারা বলেন, কালীগঞ্জের যুবলীগ নেতা সোহাগ খন্দকার ও ছাত্রলীগ নেতা শাহ আলম সহ কয়েকজন ভিরিন্দা ও কাজৈর গ্রামের পাশে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। তাদের বাঁধা দিতে গেলে অস্ত্রদারী সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখায়।
ডাঙ্গার ভিরিন্দা এলাকার ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন জানান, ভিরিন্দা ও কাজৈর এলাকায় প্রায় পাঁচটি ইটের ভাটা রয়েছে। কালীগঞ্জের লোকেরা অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালু তোলার কারণে ২০১৬ সালে এখানের দুটি ইটের ভাটা ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। এতে তখনও প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয় ইটভাটার মালিকরা।
ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সাবের উল হাই জানান, কালীগঞ্জের কিছু লোক দীর্ঘদিন ধরে ওই অঞ্চলের নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি জানান, নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকে অবগত করা হবে।
এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: সোহাগ হোসেন বলেন, নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।