নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীর মাধবদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ তার কলেজ কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের এভাবেই ধমকান প্রতিদিন। শুধু তাই নয়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিলম্বে দেয়া, পরীক্ষা চলাকালে হলে ঢুকে পরীক্ষার্থীকে কান ধরিয়ে উঠবস করানো, খাতা নিয়ে যাওয়া এমকি ‘কিভাবে এ প্লাস পাবি দেখে নিব’, পরীক্ষার্থীকে এমন হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ পর্যন্ত রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাধবদী এস.পি ইন্সটিটিউশনের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র মাধবদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ পরীক্ষার্থীদের নানান মানসিক চাপ, ক্ষেত্র বিশেষ শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত করেন তিনি।
একাধিক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, হলে ঢুকার সময় ‘চেক’ করার নাম করে আমাদের জামা-কাপড় খুলতে বলেন আবুল কালাম আজাদ। আমরা সার্ট, প্যান্ট খুলতে না চাইলে তিনি তার সহকারিকে ডাক দিয়ে বলেন ‘ওই, দড়ি নিয়া আয়, ওরে আইজ বান্ধুম’। প্রতিদিন পরীক্ষার হলে এসে অকারণে আমাদের খাতা নিয়ে রেখে দেন ১০ মিনিট, কখনও আধা ঘন্টা পর্যন্ত। কেউ খাতা না নিতে অনুরোধ করলে সাথে সাথে তাকে কান ধরিয়ে উঠবস করান হলের ভিতরেই। আমাদের মেয়ে সহপাঠীরাও ছাড় পায়না তার নির্যাতনের হাত থেকে।
কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভের সাথে জানান, বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষার দিন আধা ঘন্টা দেরিতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের হাতে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা এসময় প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ তাদের উপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন- ‘তোরা কিভাব এ প্লাস পাস তা দেখে নিবো। প্রয়োজনে ফেল করিয়ে রাখব।’ এমনকি মেয়েদেরও নানা হয়রানি করেন এই শিক্ষক।
এব্যপারে মাধবদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থে এসব ক্ষুদ্র কাজ করতে হয়। আমি কড়াকড়ি করায়তো পরীক্ষার্থীরা ম্যাজিস্ট্রেটের হাত থেকে বেঁচে যায়। না হলে ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তো ওদের শাস্তি দিতে শুরু করবে।’
পরীক্ষার্থীকে দড়ি দিয়ে বাধতে চাওয়া, কান ধরিয়ে উঠবস করানো, এটা কেমন কড়াকড়ি? আইন অনুযায়ী এটার কোন বৈধতা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসির কোন উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন আপনিও মানুষ, আমিও মানুষ। মানুষ হিসাবে আমার দুই/একটা ভুল হতেই পারে। আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দেন।’
উল্লেখ্য, এ বছর মাধবদী এস.পি ইন্সটিটিউশনের ৭৫৯ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্র এই গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ।
সূত্র: দৈনিক আলোকিত সময়