নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বুধবার,২৭ মার্চ ২০১৯:
১৯৭১ সাল বর্বর পাকিস্তানীদের দোসর দেলোয়ার নামে এক রাজাকার ময়না নামে এক নববধূকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পাষবিক নির্যাতন করে পাকিস্তানীদের ক্যাম্পে তুলে দেয়। নির্মমভাবে হত্যা করে একজন বাউল শিল্পী ও তার স্ত্রীকে। আর রাজাকার একবার জেলে আটকা থাকাবস্থায় বাংলার দামাল ছেলেরা যখন ফাঁসির দাবিতে মিছিল করে। তখন রাজাকার দেলোয়ার দম্ভুক্তি করে বলে আমি ধর্মের কুলুক দিয়ে এদেশের মানুষকে পকেটে ভরে রেখেছি আর তোমরা করেব আমার বিচার? এভাবেই চলতে থাকে “হায়েনার হাসি” নামে একটি মঞ্চনাটক। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধায় নরসিংদী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর হলরুমে নাটকটি মঞ্চস্ত হয়।
প্রখ্যাত নাট্যকার কামরুজ্জামান তাপুর পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় বাঁধন হারার পরিবেশনায় “হায়েনার হাসি” নাটকটি মঞ্চস্ত হয়। নরসিংদী জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঁধন হারা থিয়েটার স্কুলের ২৬ জন নাট্যকর্মী নাটকটিতে অংশগ্রহণ করে।
নাটকটিতে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের কাহিনী। তুলে ধরা হয়েছে বঙালীর বাড়িঘর জালিয়ে দেওয়ার দৃশ্য। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা কিভাবে বাংলার শিশু, গৃহিনী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। আর এই নারকীয় তান্ডব থেকে বাংলাকে মুক্ত করার জন্য এদেশের যুবকদের যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছাশক্তি ও প্রশিক্ষনের বিষয়গুলো। শেষাংশে একটি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশের নির্যাতিত নারীদের আর্তনামের চিৎকার। তারা দাবী জানায়, তাদের নির্যাতনকারীদের বিচারের। আর তাদের এই নির্মম নির্যাতনের বিভীষিকা মনে করে বুকফাটা কান্না জড়িত কন্ঠে একটাই আওয়াজ তুলে আমরা কি নির্যাতনের বিচার পাবোনা? আমরা কি দেখতে পাবোনা আমাদের বিচার। কথাগুলো শেষ হতে না হতেই বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধ প্রশিক্ষন শেষে দেশে এসে পাকিস্তানীদের হত্যা করে। আর বাংলার রাজাকারদের ধরে এনে ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করে দেশের স্বাধীন পতাকা উত্তোলন করে। এভাবেই যখন নাটকটি শেষ আওয়াজ বাঝতে থাকে ঠিক সেই সময়ে চোখের জল মুছতে মুছতে মঞ্চে উঠলেন বাঁধন হারা থিয়েটার স্কুলের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। নাটকের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে উঠলেন, এই নাটকটির মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম এদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানবে, জানকে দেশের অস্তিত্বকে। বুকে ধারণ করবে দেশের মমত্ববোধক। আর এভাবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সবশেষে বাধন হারার ৮ম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন ও সকলের মধ্যে বিতরণ করেন।