তারেক পাঠান | নরসিংদী প্রতিদিন-
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯:
নরসিংদীর পলাশ উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার, অসহায় গরিব মানুষের মোবাইল নম্বরে ফোন করে গভীর নলকূপসহ বিভিন্ন পকল্পের সুবিধা প্রদান করা হবে বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র।
গত (১৫এপ্রিল) থেকে পলাশ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ,মেম্বারসহ অসহায় গরিব মানুষের সাথে এ ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্য ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছে।
এ ঘটনায় উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ও ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার দিন দুপুর ১২টার দিগে আমার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একটি অপরিচিত এয়ারটেল নম্বরে ফোন আসে।
ফোনটি রিসিফ করার পর অপর প্রান্ত থেকে একজন নিজেকে পলাশ উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানান চেয়ারম্যান সাব গভীর নলকূপের জন্য যে দশটা নাম দিয়েছিল ওই ব্যপারে চেয়ারম্যান সাবকে ফোন দিয়েছিলাম। ওনি নাকি ব্যস্ত আছে বলেছে আপনার সাথে কথা বলতে। প্রতিটি টিউবওয়েলের জন্য ৭০০০ হাজার ৬শ করে জমা দিতে হয়।
এমপি সাবের বিশেষ ক্ষমতা বলে এইটা এখন ৫০০০ হাজার ১শ ৫০ টাকা করা হয়েছে । এর মধ্যে ৫ টা টিউবওয়েল আগে দেওয়া হবে। যেহেতু টাকা কমছে। আপনাদের লিস্ট থেকে কোন পাঁচজনকে গভীর টিউবওয়েল আগে দিবেন তাদের নাম ঠিকানা মোবাই নাম্বার দেন।
পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইল ফোনে বিষয়টি আলাপ করলে ওনি জানান আমাকে ও ফোন করেছিল আমি ব্যস্ত আছি তোমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেছি। তুমি ওই তালিকা থেকে পাঁচজনের নাম দিয়ে দাও। আমি পাঁচজনের নাম ঠিকানা দেওয়ার পরের দিন জানতে পারি, ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য আরিফুল ইসলাম এর কাছ থেকে ৫০০০ হাজার ১শ ৫০ টাকা ও চরসিন্দুর গ্রামের প্রণব মিয়ার ছেলে নাহিদ মিয়ার কাছ থেকে ৩০০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যপারে ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার আরিফুল ইসলাম বলেন,ওই দিন বিকালে ৩টার দিগে আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বলে আপনার ইউনিয়ন থেকে গভীর টিউবওয়েলের জন্য যে লিস্ট দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আপনার গ্রামেও একটি নাম আছে। আজকের ভেতর টাকা দিলে গভীর টিউবওয়েলের মালামাল পাঠানো হবে।
কথামত তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে আমি নিজে ৫০০০ হাজার ১শ ৫০ টাকা দেই। তাদের বেধে দেওয়া সময় চলে গেলে ওই নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি সন্দেহ জনক মনে হলে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে অবগত করি।
পরে জানতে পারি টিউবওয়েল দেয়ার নাম করে আমাদের ইউনিয়নের নাহিদ মিয়া কাছ থেকেও বিকাশের মাধ্যমে ৩০০০ টাকা নিয়েছে চক্রটি। পরে উপজেলার জনস্বাস্থ্য অফিসে যোগাযোগ করলে বিকাশে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সর্ম্পূণ অস্বীকার করা হচ্ছে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশ উপজেলার জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন , আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে অভিযোগ এসেছে তার পরিমাণ ২০ হাজার টাকার মত হবে। ঘটনা শুনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী স্যারকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জনগণকে সেবা দেই। আমরা বিকাশের মাধ্যম কারও কাছ থেকে টাকা নেই না। সেবা প্রাপ্তি যারা আছেন তারা সরাসরি আমাদের অফিসে আসবেন।
এদিকে ওই কর্মকর্তা তার ফেসবুকের টাইম লাইনে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে পোস্টও দিয়েছেন
পাঠকদের জন্য তার ফেসবুকের টাইম লাইনের পুরো লেখাটি হুবুহুব তুলে ধরা হল-সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে এক প্রতারক চক্র (০১৬৪১৫১১১৫৬) আমার পরিচয় দিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে টিউবওয়েল এর যে “ট্র্যাক্সর টাকা” বিকাশ এর মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে।
আমাদের “জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর” এই ভাবে কোন সময়ই এ টাকা নেয় না। তাই সকলকে সজাগ থাকার জন্য বলা হচ্ছে। টাকা লেনদেন করলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।