1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

পলাশে বৃদ্ধ মায়ের ঠাই হলো না ছেলের অট্টালিকায়

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | শনিবার, ২২ জুন, ২০১৯
  • ২২২ পাঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শনিবার, ২২ জুন ২০১৯:
স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিজস্ব মালিকানাধীন তিনতলা ভবনে থাকেন একমাত্র ছেলে কিরন শিকদার। অথচ সেখানে ঠাই মিললো না প্রায় শত বছর বয়সী তার বৃদ্ধ মা মরিয়ম বেগমের। ঠাই মিললো পার্শ্ববর্তী মহল্লায় ভাড়া করা অন্যের একটি ভাঙা একটি টিনের ঘরে।
মরিয়ম বেগম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পলাশ বাজার এলাকার মৃত মজনু মিয়ার স্ত্রী। ২০ বছর আগে মারা যান স্বামী মজনু মিয়া। তাঁর একমাত্র ছেলে কিরন শিকদার স্থানীয় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ও ঘোড়াশাল পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

স্ত্রীর কথায় গত রমজান মাসে বৃদ্ধ মাকে পার্শ্ববর্তী নতুন বাজার এলাকার জনৈক গফুর মিয়ার একটি ভাঙ্গা টিনের ঘরে রেখে গেছেন একমাত্র ছেলে কিরন। সেখানে গিয়ে ছেলে মাঝেমধ্যে কিছু বাজার সদাই কিনে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলেও বৃদ্ধা মরিয়মের দেখাশোনা করছেন পাশের ভাড়াটিয়ারা।
স্থানীয়রা জানান, বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন আনুমানিক ৯৫ থেকে প্রায় শতবর্ষী মরিয়ম বেগম। লাঠিতে ভর দিয়ে কোন রকমে হাঁটতে পারেন। একমাত্র ছেলে তার স্ত্রীর কথায় গত রোজার মাসে মাকে রেখে গেছেন নতুন বাজার এলাকার গফুর মিয়ার মালিকানাধীন অন্ধকার একটি টিনের ভাঙা ঘরে। অথচ ওই ঘরের অদূরেই রয়েছে ছেলের একটি তিনতলা বাড়ি।

সেখানে ঘরের ভিতর একটি পুরোনো তোষক, আর দুই চারটি থালা বাসন ছাড়া আর কিছুই নেই। আর এই অন্ধকার ঘরেই একা একা দিন পার করছেন এই বৃদ্ধা মা। মনের ইচ্ছে ছিল ছেলে মেয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় সুখে শান্তিতে পার করবেন। কিন্তু এমন ভাগ্য হলো না এই বৃদ্ধা মায়ের।
মরিয়ম বেগমের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কিরণ শিকদার সাজ ডেকারেটর নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। পলাশ বাজার এলাকায় তিনতলা একটি নিজস্ব ভবনে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। মাকে সেখানে রেখে যাওয়ার পর মাঝে মধ্যে এসে কিছু বাজার সদাই করে দিয়ে যায় ছেলে। বৃদ্ধা মরিয়ম বেগমের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে দিচ্ছেন পাশের ভাড়াটিয়ারা।

মরিয়ম বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ছেলের বউ আমাকে তাদের সাথে রাখতে চায় না। তাই ছেলে আমাকে এখানে রেখে গেছে। ছেলে মাঝে মধ্যে এসে আমাকে বাজার সদাই করে দিয়ে যায়। আর এভাবেই দিন পার করছি।
একা একা এখানে থাকতে কেমন লাগে জানতে চাইলে তিনি জানান, জীবনের শেষ মুহুর্তে এসে অনেক কিছু চাওয়া-পাওয়ার থাকলেও কিছুই করার নাই। আমার অনেক ইচ্ছে ছিল জীবনের শেষ সময়ে ছেলে সন্তান, নাতি-নতনিকে নিয়ে হাসি খুশিতে দিন পার করবো। কিন্তু কি করার আছে আমার কপালে সেই সুখ নাই। আমার ছেলের ইচ্ছা থাকলেও সে তার স্ত্রীর জন্য পারছে না।
আমাকে তাদের সাথে রাখার কথা শুনলে তার স্ত্রী লিপি আক্তার ছেলের সাথে ঝগড়া করে। এখানে আসার আগে চলনা এলাকার গ্রামের বাড়িতে একা একা দিন পার করেছি। তারপর ছেলে বললো আমাকে তার কাছে নিয়ে আসবে। ভাবছিলাম তার বাড়িতে তুলবে। পরে দেখি সে আমাকে এখানে ঘর ভাড়া করে দিয়েছে।

এখানে ছেলে এসে খোঁজ-খবর নিলেও ছেলের বউ নাতি-নাতনিরা কেউ-ই আসে না। কোন খোঁজ-খবরও নেয় না। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর সেও তেমন কোন খোঁজ-খবর রাখতে পারে না। আমি এখন সন্তানদের বোঝা হয়ে গেছি। মাঝে-মধ্যে অনেক একাকিত্ব লাগলে পাশের ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে সময় পার করি।

মরিয়ম বেগম আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছি। চিকিৎসা না করায় প্রায় ১০ বছর আগে বাম পাশের চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। এখন ডান পাশের চোখটিতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। হয়তো এটিও নষ্ট হয়ে যাবে।
দিনা বেগম নামে পাশের এক ভাড়াটিয়া জানান, রমজান মাসে বৃদ্ধা মাকে তার ছেলে এখানে রেখে গেছেন। শোবার জন্য ঘরে ছোট একটি চৌকি দিয়েছিলেন। সেটিও ছাড়পোকার খাওয়া। তাই এটিও নাই এখন। মরিয়ম বেগম এখন মাটিতে বিছানা করে ঘুমান। এমন একজন বৃদ্ধা মাকে এভাবে একা এই অন্ধকার ঘরে রাখা খুবই অমানবিক। শুনেছি ছেলের বউ নাকি তাদের কাছে রাখতে চায় না। বউয়ের কথায় এখানে বৃদ্ধা মাকে ফেলে গেছে। মরিয়ম বেগমের রান্নাবান্না, কাপড়চোপড় ধোয়া এসব আমরাই করে দেই।

এ ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করা হলে কিরন শিকদার বিষয়টি ব্যক্তিগত জানিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে মাকে আমার দোকানের পাশে একটি ঘর ভাড়া করে সেখানে রেখেছি। যে মায়ের জন্য আমি পৃথিবীর মুখ দেখেছি, সেই মায়ের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে। যেখানে রেখেছি সেখানে মায়ের খাবার দাবারসহ সব দেখাশোনা আমি নিজেই করছি। কিছুদিনের মধ্যে আমার বোন চলে আসবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD