নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার,২৫ আগস্ট ২০১৯:
নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ভুয়া র্যাব চক্রের প্রধানসহ তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব-১১। রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে এ তথ্য জানান, র্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব। তিনি জানান, শনিবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রুপগঞ্জের রূপসী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জয়নাল আবেদীন (২৭), নাজমুল হোসেন (২৭) ও মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)।
মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানান, র্যাব প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত ভুক্তভোগী একজনের নিকট থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে র্যাব-১১। এতে দেখা যায় প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দফতরের বিভিন্ন পদের সীলমোহর ব্যবহার করে নিজেদের তৈরিকৃত ভুয়া নোটিশ প্রেরণ করে। নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উৎকোচ প্রদানপূর্বক বিভিন্ন ভুয়া অভিযোগ থেকে অব্যাহতি মিলবে এমন আশ্বাস দেয়। অন্যথায় গ্রেফতার করার ভয় দেখানো হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত সকলের বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকায়। প্রতারক চক্রের প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন বিজিবিতে চাকরি করত। বিজিবিতে চাকরিরত অবস্থায় সে ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নাম করে অনেক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। তারই নেতৃত্বে প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালী লোকদেরকে র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার নামে ও মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরও জানান, প্রতারক চক্র র্যাব সদর দফতরের বিভিন্ন পদবীর নামীয় সীল তৈরি করে তাদের প্রস্তুত করা বিভিন্ন ভুয়া নোটিশে নিজেরাই স্বাক্ষর করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ভুয়া নোটিশগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌঁছানো হত। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা জন্য বিজিবির ইফনিফর্ম পরিহিত ছবি ও র্যাব সদস্যের ছবি এডিটিং করে র্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত ভুয়া ছবি তৈরি করে তারা প্রদর্শন করত। উক্ত প্রতারক চক্র মানুষের শ্রেণি বুঝে কখনো র্যাবের এসআই এবং কখনো ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে আসছিল। এভাবে তারা র্যাবের পরিচয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ইউনিফর্ম পরিহিত ২টি ছবি (এডিটিং করা), বাংলাদেশ র্যাব লেখা ও র্যাবের মনোগ্রাম সম্বলিত ১টি জ্যাকেট, র্যাব সদর দপ্তরের সীল ও অফিসারদের ভুয়া স্বাক্ষরসহ ৭টি নোটিশ, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার ও তদন্তকারী অফিসার নামীয় ৪টি সীল, বিজিবির ১টি আইডি কার্ড, বিজিবির ১ সেট ইউনিফর্ম, ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১টি মোবাইল ও ১৪টি সীম কার্ড জব্দ করা হয়।