খন্দকার শাহিন | নরসিংদী প্রতিদিন –
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৯: নরসিংদীতে বিভিন্ন সাইজিং মিলে গ্যাস সংযোগের অভাবে কেরসিন দিয়ে পুড়ছে কাঠ, জুট, বড় বড় গাছের গুড়ি। এর ফলে বাড়ছে কালো ধোঁয়া ও বায়ু দূষণ। এতে করে শীতকালীন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নরসিংদী জেলাবাসী।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রকৃতির দান এই বাতাস দূষিত হচ্ছে বিভিন্নভাবে। এর প্রতিকারে পরিবেশ আইন থাকলেও তা তোয়াক্কা করছে না কেউ। নরিসংদীর শিল্প শহরের উপজেলা গুলোতে ক্রমাগত বেড়েই চলছে বায়ূ দূষণ। দেখা গেছে নরসিংদীতে শিবপুর, পলাশ, মাধবদী শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামের নুরালাপুর, মহিষাশুড়া, কাঠালিয়া ইউনিয়নের গ্রামে গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, এতে ডাংই অ্যান্ড সাইজিং মিলগুলো ব্যবহার করছে বয়লার। এসব বয়লারের পানি প্রচুর তাপমাত্রা তৈরির জন্য গ্যাসের বিকল্প হিসেবে পুড়ানো হচ্ছে জুট, কাঠ, কয়লা কেরোসিন। এছাড়া ইটভাটা ও সাইজিং মিলের নির্দিষ্ট ফিল্টারের কালো ধোঁয়ায় দূষণ হচ্ছে বাতাস।
এছাড়া নরসিংদীর বিভিন্ন মিলের মালামাল সরবাহ করার জন্য ব্যবহার করা হয় নছিমন, করিমন এর ইঞ্জিনের কালো ধোঁয়া, নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে চলাচলে উড়ছে ধূলিকণা, ইট ভাটার ধোঁয়া এসব প্রতৃতি বায়ু দূষণের জন্য দায়ী। এ জেলার শহরগুলোতে বেশি কালো ধোঁয়া ছড়ায় নছিমন ও বয়লারযুক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান যা বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে বলে জানান পরিবেশবিদরা।
তাছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদ সহ বিভিন্ন খান খননে হাজারো গাছ কাটা পরছে ও শহরে বড় বড় বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে। এতে করে বাতাসে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়েই চলছে।
এ দিকে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে সারা শহর ও গ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। কালো ধোঁয়া ও ধূলিকণাযুক্ত দূষিত বায়ু থেকে মানুষ নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। রাস্তায় মাক্স না বেঁধে হাঁটা যায় না। তাছাড়া কতক্ষণ হাঁটলেই চোখ দিয়ে পানি ঝড়তে থাকে। এ কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রতিবন্ধী শিশু জন্মের হার বেড়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।
শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মধ্যে বৃহত্তর কাপড়ের আমদানি ও রপ্তানি স্থান নরসিংদী। এ শহরের পাশাপাশি গ্রামেও সুতা সাইজিং, কাপড় প্রসেসিং ও বয়লার করতে হয়। আর যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ নেই। তাদের জ্বালানি হিসেবে কাঠ, জুট কাপড়, কয়লা, কেরোসিন পুড়িয়ে পানি গরম করতে হচ্ছে। এতে খরচও অনেক বেশি বহন করতে হয় মিল মালিকদের। সরকার যদি শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ দেয়ার ব্যবস্থা করে, তাহলে পরিবেশ ও বায়ু দূষণ অনেকটা হ্রাস পাবে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।