সাব্বির হোসেন | নরসিংদী প্রতিদিন –
শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯ :
ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস আজ ৬ ডিসেম্বর । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন বাকি থাকতে দেশজুড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাক হানাদার বাহিনী। এরই মধ্যে তৎকালীন কালীগঞ্জ থানার ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামের আবুল কাসেমের বাড়িতে তারা সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডটি চালায়। আজও এলাকাবাসী বিজয়ের মাস এলে গভীর শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঘোড়াশাল পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিক ভূঁইয়া জানান, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সন্ধার সময় পাক হানাদার বাহিনী আটিয়াগাঁও গ্রামের আবুল কাসেম এর বাড়ির দুই দিক থেকে ঘেরাও করে আক্রমণ শুরু করে। এ সময় তার বাড়িসহ আশেপাশের আরো ১০/১২টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় আবুল কাসেম তার পরিবার নিয়ে ঘরের ভেতর একটি মাটির গর্তে লুকিয়ে থাকেন। তার বাড়িতে পালিয়ে থাকা ৩২ নারী- পুরুষ ও শিশুসহ একটি মাটির ঘরের দরজা ভেঙ্গে হানাদার বাহিনী তাদের উঠানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে দেয়।আচমকা নরপিশাচদের আগ্নেয়াস্ত্র গর্জে ওঠে। বাড়ির উঠানেই ঢলে পড়ে ১৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশু। গুরুতর আহত হন ৬ জন। এমন অবস্থায় পালিয়ে থাকা আবুল কাসেম মাটির গর্তে অজ্ঞান হয়ে যায়। সেদিন এ ঘটনায় শহীদ হন মোকছেদ আলী, আকমন আলী, মালাবঙ, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, আলিমুন বেগম, শিশুপুত্রসহ আয়েশা, শাহাজাহান, রহম আলী, আ. হেকিম, হযরত আলী,শাহাজউদ্দিন শাহা, নেহাজউদ্দিন চুইল্লা, নেজুসহ আরো ৩ জন।
এদিকে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর ৪৬ বছর শুরু পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন আবুল কাশেম যার বাড়িতে সর্বশেষ বর্বর হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছিল পাক হানাদার বাহিনী।
তিনি আরো জানান, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের জন্য ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও এই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মৃতি রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই আবারো তাদের স্মৃতি রক্ষায় পলাশ উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করি।