নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন –
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯: নরসিংদীর মাধবদীতে স্বামীর বাড়ীতে কেরসিনের আগুনে ঝলসে গিয়ে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা আক্তার রুমা (২০) নামে এ গৃহবধু মারা যায় বলে জানান পুলিশ। এ ঘটনায় স্বামী বিপ্লবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আটক করে মাধবদী থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। নিহত রুমা নুরালাপুর ইউনিয়নের গদাইরচর গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে বিপ্লব (২৬) এর স্ত্রী। রুমা নরসিংদী সদর উপজেলা শিলমান্দী ইউনিয়নের মধ্য শিলমান্দী গ্রামের কাজল মিয়ার মেয়ে।
জানা যায়, গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে স্বামীর বাড়ীর গোসল খানা থেকে আগুনের ঝলসে যাওয়া ওই গৃহবধুকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গৃহবধুকে ঢাকা কলেজ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ৫দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শনিবার ভোরে মারা যায়।
নিহত রুমার বাবার দাবী যৌতুকের ৩ লাখ টাকা জন্য রুমাকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে শরীরে কেরসিনের আগুনে ঝলসে দিয়ে হত্যা করেছে স্বামী বিল্পব ও তার পরিবারের লোকজন। তিনি আরো জানান, রুমাকে প্রায় দেড় বছর আগে বিপ্লবের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। তাদের সংসারে ৭ মাসে একটি কন্যা শিশু রয়েছে। তিনি এ ঘটনায় মাধবদী থানা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় দীর্ঘদিন যাবৎ বিপ্লবের পরিবার যৌতুক দাবি করে আসছে। এরপর ঘটনার দিন দুপুরে রুমাকে পরিবারের লোক যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করে। এক পর্যায় রুমার স্বামী তার প্রতিক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইছাক মেম্বার প্রত্যক্ষদশীর বরাদ দিয়ে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন দুপরে গৃহবধুর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গোসল খানা থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের দুই পরিবারের মাঝে কোন যৌতুক নিয়ে বিরোধ ছিল তা জানা নাই। তবে বিপ্লবের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন ওই গৃহবধু নিজেই শরীরে কেরসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানিয়েছে, নিহত গৃহবধুর বাবা কাজল মিয়া থানায় এসে বিষয়টি অবগত করেছে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাবাদের জন্য নিহত রুমার স্বামী বিপ্লবকে আটক করা হয়েছে।