নিউজ ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার-২১ জুন ২০২০:
আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর রত্না হত্যাকাণ্ডের ৩ দিনের মধ্যেই অভিযান চালিয়ে আসামি ইলিয়াস (২৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২১ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির। এর আগে শনিবার দিবাগত গভীর রাতে ঝিনাইদহ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইলিয়াস মাগুড়া জেলার শ্রীপুর থানার সফি মন্ডলের ছেলে। সে আশুলিয়ার জামগড়ায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতো।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির বলেন, গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি ইলিয়াস আছে মাগুরা জেলার শ্রীপুর এলাকায়। পরে জানতে পারি যে ঝিনাইদহ জেলায় সটকে পড়েছে। ঝিনাইদহ গিয়েও কয়েক স্থানে ঘুরে পরবর্তীতে তাকে আটক করতে পারি।
তার মোবাইল বন্ধ ছিল এবং তার আত্নীয় স্বজনের সাথেও কোন যোগাযোগ ছিলনা তার। আমি তথ্য পাই আমার সোর্সের মাধ্যমে।
এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থারও সহায়তা নিয়েছি। ঝিনাইদহ এলাকায় আসামির শ্যালিকার শ্বশুর বাড়ি। সেখানে অনেক নাটকীয়তার মাধ্যমেই তাকে আটক করতে সক্ষম হই।
আসামি এবং খুনি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার একই পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। পরিচিয়ের কিছুদিন পর তাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ভাই-বোনের মত সম্পর্ক থাকলেও পরে তা রূপ নেয় পরকীয়ায়।
রত্নার আগের স্বামীর ঘরের একটি ১৬ বছর বয়সী মেয়ে আছে। আসামি ইলিয়াসকে বিয়ে করার লোভে রত্না আগের স্বামীকে তালাক দেয়। কিন্তু প্রায় ১ মাস আগে ইলিয়াস নিজের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করে অন্য এক মেয়েকে। যদিও এ তথ্য রত্না মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জানতে পারেনি। বিয়ে করার পর ইসরাফিল রত্নাকে বেশি সময় দিতে পারতনা। এতে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে গালাগালি, হাতাহাতি এক পর্যায়ে মারামারি পর্যন্ত হয়। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ইসরাফিল সিদ্ধান্ত নেয় রত্নাকে মেরে ফেলার। সুযোগ বুঝে তাকে ঘরে একা পেয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ইসরাফিল।
হত্যা করার পর ঘরের বাইরে তালা লাগিয়ে ইসরাফিল চলে যায়। এরপর রত্নার ভাইকে ফোন দিয়ে ইসরাফিল জানায় যে সে নিজেই রত্নাকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ঘরে আটকে রেখে গেছে। বাইরে তালা মেরে আসছি। লাশ উদ্ধার কর। তারপর রত্নার ভাই আশুলিয়া থানায় খবর দিলে আমরা লাশ উদ্ধার করি।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে ইলিয়াসকে গ্রেফতারের জন্য সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। ৩ দিনের শ্বাসরুদ্ধ অভিযান শেষে তাকে ঝিনাইদহ থেকে গ্রেফতার করা হয়।