সেলুলয়েড থেকে ডিজিটাল আঙ্গিকে রুপান্তরিত হওয়ার আগে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো পরিবেশিত হতো কাকরাইল ফিল্ম পাড়া থেকে। রমরমা এই বাজারটি এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। এখানে যারা মধ্যস্বত্ত্বভোগী ছিলেন তাদের আগের দাপটও আর নেই। তাদের অনেকের কেউ কেউ মুদি দোকান দিয়েছেন। কেউ ইন্স্যুরেন্সের দালালি করছেন। অর্থাৎ তারা সমকালীন ভিডিও ক্যাসেটের মতো এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছেন। এই মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের অর্থগৃধ্নু কেউ কেউ একটা সময়ে ভিডিও পাইরেসীর সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। তারা তখনো বুঝতে পারেননি, নিজেদের উপার্জন স্থল চলচ্চিত্রকে তিলে তিলে তিলোত্তমা না করে, কিভাবে তারা তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। কিন্তু যখন তাদের সম্বিৎ ফিরে এসেছে, তখন তাদের অন্য পেশা খোঁজা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকলো না। চলচ্চিত্রে এই মধ্যস্বত্ত্বভোগীর কাজটি এখন চলে গেছে নতুন এক শ্রেণীর হাতে। তারা টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে ছবি সরবরাহ করে থাকেন। টিভি চ্যানেলগুলোর অনেকগুলোই টিকে আছে চলচ্চিত্রের ওপর নির্ভর করে। অথচ এই চ্যানেলগুলো একটি ছবির নির্মাণ পর্যায় থেকে মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত প্রচার প্রচারণায় কোনো সহযোগিতা করে না।
প্রযোজক পরিবেশক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা ভাবছেন ওভার দ্যা টপ বা ওটিটির মতো একটি চ্যানেলের সঙ্গেই তারা চুক্তিতে যাবেন, যাতে ছবিগুলো অন্যান্য চ্যানেলে ছড়িয়ে না থাকে। তবে পরিচালক মতিন রহমান আরো একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চুক্তিটা একাধিক চ্যানেলের সঙ্গেও হতে পারে। তিনি বলেছেন, কয়েকটি চ্যানেল বা নির্দিষ্ট একটি চ্যানেলের সঙ্গে প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি চুক্তি করতে পারে সিনেমার গান, ট্রেলার ও অন্যান্য অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য। এ চুক্তি হবে টাকার বিনিময়ে। তিনি একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেরও প্রস্তাব করেছেন। তার প্রস্তাবনায় চলচ্চিত্রের প্রচার ও প্রসারের জন্য সরকারিভাবে কিংবা প্রযোজক পরিবেশক সমিতির তত্ত্বাবধানে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম করা যেতে পারে। একটি নির্দিষ্ট তহবিল থেকে কিছু টাকা দিয়ে সিনেমাগুলোর প্রচারণায় ব্যয় করবে প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি, যা পরে ছবি বিক্রির অর্থ থেকে সমন্বয় করা যেতে পারে।