হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত মাদরাসার মাঠে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা ফের মাদরসার সবগুলো গেইট বন্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা আহমদ শফী, সহযোগী পরিচালক আল্লামা শেখ আহমদ, আল্লামা ওমর ফারুকের রুমসহ মাদরাসার শিক্ষা ভবনের বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও মাদ্রাসার সব গেইট বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্কবস্থায় বাইরে অবস্থান করে।
এরমধ্যে প্রশাসন যাতে মাদরাসার ভিতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে, সেজন্য মসজিদের মাইকে বারবার মাইকিং করে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে, বাহির থেকে সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসীকে মাদ্রাসার ভিতরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেও জন্য বিভিন্ন শুকনো খাবার সরবরাহ করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন- আমাদের প্রদান দাবিগুলো হল আল্লামা আহমদ শফি শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ায় পরিচালক পদ থেকে তাঁকে সম্মানজনক অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে এবং তাঁর পুত্র আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
এছাড়া, ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়নসহ সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, শিক্ষকদের পূর্ণ অধিকার এবং নিয়োগ-বিয়োগের ক্ষমতা শূরার নিকট পূর্ণ ন্যস্ত করতে হবে। বিগত শূরার হক্কানি আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদেরকে পদচ্যুত করতে হবে। এরমধ্যে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারসহ দুটি দাবি পূরণ করেছে বলে গতকাল (বুধবার) মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাকি দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তারা আরও বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন যাতে কোনো কুচক্রী মহল বিঘ্নিত করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। প্রশাসনের প্রতিও অনুরোধ, তারা যেন আমাদের সুশৃঙ্খল আন্দোলনে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ না করে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার রাতে ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে মাদ্রাসার শুরা কমিটি (সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরাম) বুধবার এক জরুরি সভা ডেকে আনাস মাদানিকে মাদ্রাসার পদ থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়।