বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ছুটিতে এসে দেশে আটকা পড়া প্রবাসী কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো ও কর্মস্থলে পাঠানোর বিষয়ে ‘কিছুই করার নেই’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, ‘প্রবাসী কর্মীদের ভিসার মেয়াদ আরও ৩ মাস বাড়াতে সৌদি আরবকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এখনও সৌদি সরকারের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। অনুরোধ জানানো ছাড়া আর কিছু করার নেই। সৌদি সরকার অনুরোধ না রাখলে কী করার আছে?’
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিসার মেয়াদ ৩ মাস বাড়াতে ইতোমধ্যে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু দেশটির কাছ থেকে আশ্বস্ত হওয়ার মতো কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। উল্টো সৌদি কর্তৃপক্ষ দেশটিতে থাকা অবৈধ কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে বলছে।’
মহামারি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন জারির আগে দেশে আসে কয়েক লাখ প্রবাসী শ্রমিক। আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় লকডাউন শেষ হলেও তারা এখন কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কয়েক দফায় ভিসার মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়েছে।
এদিকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হবে সৌদি প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ। এই সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে না পারলে তারা আর সৌদিতে ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সৌদিতে প্রায় ৮০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী রয়েছে।
এরইমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর সৌদি আরব দূতাবাস ও রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে সৌদি প্রবাসীদের ইকামা বা ভিসার মেয়াদ আরও অন্তত ৩ মাস বাড়াতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সৌদি প্রবাসীদের জন্য ঢাকা থেকে শুধু সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের দুটি বিমান চালু রয়েছে। সৌদি সরকার রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান পরিচালনার অনুমতি দিচ্ছে না। আগামী ১ অক্টোবরের আগে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ারও সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে।
এদিকে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করায় বুধবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সকালে কারওয়ান বাজারে সাউদিয়া কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। সেখান থেকেই পরে তাদের একাংশ ইস্কাটন গার্ডেনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রস্তুত করে সাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন প্রবাসীরা।