নরসিংদীর পলাশে চাহিদার অনুযায়ী টাকা দিয়ে জমি না কেনায় বসতঘরের প্রধান ফটকের সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে এক প্রবাসীর পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় অগ্নি দাস নামে এক ব্যক্তি উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের পণ্ডিত পাড়া গ্রামে ওই পরিবারকে প্রায় এক বছর ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার ঘটনাটি জানিয়েও কোনো সমাধান পায়নি ভুক্তভোগী ওই পরিবার।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পণ্ডিত পাড়া গ্রামের অগ্নি দাসের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে একই গ্রামের সৌদি প্রবাসী প্রদীপ কুমার সূত্রধর দেড় শতাংশ জমি কেনেন। পরে ওই জমিতে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করে স্ত্রী ও দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন প্রদীপ কুমার। ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে গত এক বছর আগ পর্যন্তও উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো সমস্যা ছিল না। প্রায় এক বছর ধরে ভবনের পাশে অবস্থিত প্রতিবেশী অগ্নি দাস এর আরও কিছু জমি চারগুণ দামে কেনার জন্য প্রবাসী প্রদীপ কুমারকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
প্রদীপ কুমার অগ্নি দাসের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়ে নতুন করে জমি কিনতে রাজি না হলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় প্রদীপের ঘরের প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে দেয় অগ্নি দাস। এতে এক প্রকার বাধ্য হয়ে ওই ভবনের একপাশে নীচতলায় তৈরি ছোট দোকানের ভেতর দিয়ে ঘরে আসা-যাওয়া করেন প্রদীপ কুমারের পরিবার।
ভুক্তভোগী প্রবাসী প্রদীপ কুমারের ছোট ভাই গৌতম সূত্রধর বলেন, আমার ভাই এখানে জমি কিনে ভবন নির্মাণ করার এক বছর পর পর্যন্তও কোনো সমস্যা ছিল না। এক বছর আগে প্রতিবেশী অগ্নি দাস তার আরও দেড় শতাংশ জমি কেনার জন্য আমার প্রবাসী ভাইকে প্রস্তাব দেয়। তখন ভাই তার জমি বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী কেনার ইচ্ছা পোষণ করেন। বর্তমান বাজার মূল্যে এই জমির দাম দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। কিন্তু অগ্নি দাস সেই জমির দাম চাইছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। তাই আমরা জমি কেনার জন্য রাজি হইনি।
তিনি আরও বলেন, এরপর অগ্নি দাস ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় তিনতলা ভবনটির প্রবেশ ফটকের সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়। এতে আমার প্রবাসী ভাই এর তার স্ত্রী সম্পা রানী সূত্রধর ও দুই শিশু কন্যাকে ওই ঘরে প্রবেশ করতে হলে দোকানের সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার বলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন গৌতম।
জানতে চাইলে অগ্নি দাস বলেন, ‘প্রবাসী প্রদীপ কুমার চলাচলের রাস্তা না রেখেই ভবন নির্মাণ করেছেন। এখন আমার জমি দিয়ে তাদের চলাচল করতে দিতে পারি না। আমি অতিরিক্ত দামে জমি কিনতে চাপ দেইনি, বরং তারা জমির দাম কম বলছেন। এ ছাড়া তারা আমার জমিতে ময়লা আবর্জনা ফেলছেন।’
জিনারদী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য ওসমান মোল্লা বলেন, ঘটনাটি আমি আংশিক শুনেছি। পুরো বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা রুমানা ইয়াসমিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’