নরসিংদী প্রতিদিন ডেস্ক: জেলায় একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলে অনেক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন। এবং হারানো শিল্পগুলোর গতি ফিরে আসবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বহুপ্রচারিত সংবাদ পত্রের চিঠিপত্র কলামে। এ সংগ্রহীত লেখাটি নরসিংদী প্রতিদিনের পাঠকদের জন্য পোস্ট দেয়া হলো।
প্রকাশিত খবর: বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসে নরসিংদী একটি সুপ্রাচীন ও বিখ্যাত নাম। আড়িয়াল খাঁ, স্রোতস্বিনী মেঘনা ও শীতলক্ষ্যার সুকোমল জলধারায় প্লাবিত এর জনপদ। দেশের অন্যতম নদীবন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে এটা সুপরিচিত। আশির দশকে ছয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত হয় নরসিংদী জেলা।
এ জেলায় জন্ম নিয়েছেন অনেক মনীষী। যাঁদের আত্মত্যাগ ও গৌরবগাথায় সমৃদ্ধ এই দেশ। উনসত্তরের গণ-আন্দোলনের মহানায়ক শহীদ আসাদ ও একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান আমাদের এই মাটির অহংকার। এ দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে রয়েছেন এ মাটির বেশ কয়েকজন কৃতী সন্তান।
বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬৩টি জেলা কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। ব্যতিক্রম শুধু নরসিংদী জেলা। এই জেলার তাঁতশিল্পের ইতিহাস সুপ্রাচীন। এককালে বিদেশে রপ্তানিকৃত বস্ত্রের অংশ এই জেলায় উৎপন্ন হতো। বিশেষ করে মসলিন কাপড়ের সুনাম ছিল বিশ্বব্যাপী। প্রাচ্যের ম্যানচেস্টারখ্যাত বাবুরহাট এই জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের তাঁতবস্ত্রের চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করা হয় এই হাট থেকে।
এ ছাড়া জেলার ভারী শিল্প ২৩১টি, কুটিরশিল্প ১৯ হাজার ৫২১টি, ডায়িং ও ফিনিশিং ১৪০টি, জুট মিল নয়টি, সুতাকল একটি, সুগার মিল একটি, সার কারখানা দুটি, দুটি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে চলমান রাখছে এই জেলা। এই শিল্পগুলো লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থান করেছে। সাত হাজারের মতো বিদেশি বিশেষজ্ঞ কর্মরত আছেন। বর্তমান সময়ে জ্ঞান ও দক্ষতানির্ভর বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রযুক্তিগত উচ্চশিক্ষিত দক্ষ জনবলের অভাবে চলমান শিল্পগুলো যুগের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না।
এই জেলায় একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলে অনেক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন। এবং হারানো শিল্পগুলোর গতি ফিরে আসবে।
লেখক,মো. খালেকুজ্জামান
উপদেষ্টা, নরসিংদী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন পরিষদ।