লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীর মাধবদী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সায়েম মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও এক ব্যবসায়ীর ঘরের তালাভেঙে ৮০ হাজার টাকা এবং দুই ভরী স্বর্ণ অলংকার লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তাঁর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভাতিজাকে অপহরণ করে নির্যাতন করেন। পরে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে স্কুলছাত্রকে ছেড়ে দেন এএসআই।
এসব অভিযোগ করে এএসআই সায়েম মিয়ার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন নরসিংদী সদর উপজেলার বাসাইল ও পুরিন্দা গ্রামের লোকজন। আজ সোমবার সকালে নরসিংদীর বাসাইল এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, গত ২৭ জুন রাতে পুরিন্দা গ্রামে বসবাসরত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক রাতুল আহম্মেদ ভূঞা সুমনের বাড়িতে যান মাধবদী থানার এএসআই সায়েম মিয়া। তিনি সুমনকে না পেয়ে তাঁর তালাবদ্ধ ঘরের তালা ভেঙে ঘরে থাকা ৮০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার লুট করেন। পরে তিনি সুমনের বড় ভাইয়ের ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে (১৩) ধরে নিয়ে পুরিন্দা বাজারে প্রকাশ্যে হাতকড়া পরিয়ে বেধড়ক পেটান। অথচ শিশু আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার করলেও তাকে হাতকড়া বা কোমরে দড়ি বা রশি লাগানো যাবে না। কিন্তু এএসআই সায়েম মিয়া কোনো অভিযোগ ছাড়াই নির্দোষ স্কুলছাত্রকে আইন লঙ্ঘন করে আটক এবং নির্দয়ভাবে নির্যাতন করেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, শিশু স্কুলছাত্রকে পেটানোর পর এএসআই সায়েম মিয়া তাকে মাধবদী বাজারের একটি স্থানে রেখে তার পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোন দেন। পরে ওই স্কুলছাত্রের পরিবারের লোকজন এএসআই সায়েম মিয়ার হাতেপায়ে ধরে ৩৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনেন। এএসআইয়ের নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই স্কুলছাত্র এখন নরসিংদীর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এরই প্রতিবাদে আজ এলাকার লোকজন মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে পুরিন্দা এলাকার একাধিক ব্যক্তি এএসআই সায়েম মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় সময়ই এএসআই সায়েম নিরপরাধ মানুষকে ধরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। টাকা না দিলে ডাকাতি, মাদক নয়তো নাশকতার মামলা দিয়ে আদালতে চালান করার ভয় দেখান। তাঁরা এই ধরনের পুলিশ সদস্যের নির্যাতন থেকে বাঁচতে চান।
অভিযোগের ব্যাপারে এএসআই সায়েম মিয়ার মুঠোফোনে সাংবাদিকরা একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কথা বলেননি।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘এ ব্যাপারে কেউ আমার কাছে মৌখিক বা লিখিত কোনো রকম অভিযোগ করেননি। যদি আমি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।