লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন কয়েক দিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে নরসিংদীতে পুরোদমে চলছে ধর্মীয় শারদীয় উৎসবের প্রস্তুতি। দূর্গা দেবীকে দৃষ্টি নন্দন ও আকর্ষনীয় করে তুলতে রং তুলির আঁচড়ে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। ষষ্ঠীবোধনীতে দেবী দূর্গাকে পূজা মন্ডপে পৌছে দিতে কাজ চলছে দিন-রাত। মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজ সজ্জার ব্যাপক আয়োজন। শেষ মূহুর্তে চলছে প্রতিটি মন্ডপের সাজ সজ্জার কাজ। পূজাকে ঘিরে নরসিংদী জেলা পুলিশ নিয়েছে বিশেষ প্রস্তুতি। পুলিশ বলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ এ উৎসবকে ঘিরে নেয়া হয়েছে সর্ব্বো” নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবার নরসিংদী জেলায় ৩২৭ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছরের মতো এবারও দর্শনার্থীদের চাহিদা পূরণে কমতি রাখেনি শহরের বড় বড় দূর্গা পূজা মন্ডপ কমিটি। শহরের সেবা সংঘ, বাগ বিতান কাব, শিববাগ, অগ্রণী সংঘ, ক্রীড়া চক্র, বীরপুর দূর্গা বাড়ী, বৌয়াকুড় দূর্গা মন্ডপের পাশাপাশি মাধবদীর রঞ্জিত সাহার বাড়ির পূজা মন্ডপগুলোতে প্রস্তুতির কমতি নেই। পূজা মন্ডপে দৃষ্টিনন্দন প্রতিমা, বৈচিত্র সাজসজ্জা, চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা ও সাউন্ড সিস্টেমের সমারোহ ঘটিয়েছে আয়োজকরা।
অন্যান্য বছরের ন্যয় এবারও জেলার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দূর্গা পূজার আয়োজন করছে শহরের মধ্যকান্দাপাড়ার বাগবিতান কাব। তৈরী হচ্ছে নাগ মন্দির।
নরসিংদীর তুর্য্য প্রতিমা শিল্পালয়ের সত্ত্বাধীকারী দুলাল পাল বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিমা তৈরীতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরনের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে প্রতিমা তৈরীতে তেমন লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কারন ক্রেতারা আগের দামেই প্রতিমা তৈরী করে নিতে চাচ্ছেন। আর প্রতিমা তৈরীতে আগের মত কারিগর পাওয়া যেমন দুষ্কর তেমনি আগের তুলনায় অনেক পালরাও তাদের পূর্বপুরুষের পুরানো পেশা এতিহ্য ছেড়ে ঝুকেছেন অন্য পেশায়।
বিশ্বকর্মা প্রতিমা শিল্পালয়ের সঞ্জিত পাল বলেন, এখন প্রায় কাজ শেষ পর্যায়ে আর বাকি রংয়ের প্রলেপ ও অঙ্গ সজ্বার কাজ। নির্দিষ্ট সময়ে পৌছে দিতে হবে প্রতিমা। তাই এই মূহুর্তে আমাদের এখন যেন দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছিনা। নরসিংদীর এসব প্রতিমা তৈরীর কারখানা থেকে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, সিলেট, বি-বাড়িয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা সরবরাহ করা হয়। এবার পূজায় সর্ব নিন্ম ৩০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় প্রতিমা বিক্রি হচ্ছে।
নরসিংদী জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর সূর্য্যকান্ত দাস বলেন, পূজা উপলে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন সহ পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। জেলার সকল মন্ডপ গুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকির জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে ।
পুলিশ আমেনা বেগম(বিপিএম) বলেন, দূর্গা পূজাকে ঘিড়ে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫ শতাধিক পুলিশ ও সাদা পোষাকের পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। তাঁদের সহযোগীতার জন্য থাকবে প্রায় আড়াই হাজার আনসার ও মন্ডপের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল। এছাড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল টিম নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে পূজা মন্ডপ গুলোতে গোয়েন্দা নজরধারীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সনাতন ধর্মের বৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসবে সহযোগিতা কামনা করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।