নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীর রায়পুরায় আদালতের আদেশ অমান্য করে মির্জাচর ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনের ফলাফল গ্রেজেট আকারে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সাথে প্রতিদন্ধী প্রার্থীর নিয়মতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। এমন অভিযোগ নির্বাচনে অংশ নেয়া এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। এদিকে দীর্ঘদিনেও ইউপি নির্বাচন নিয়ে জটিলতা না কাটায় গ্রামীন এই জনপদে হরহামেসাই চলছে হামলা-মামলা ও সংঘর্ষ। প্রতিদন্ধী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন জিয়া নামে এক গ্রামবাসী। অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনতে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন গ্রামবাসী।
জানাযায়,গত বছরের ৭ই মে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোঃ ফারুকুল ইসলাম ফারুক ও জাফর ইকবাল মানিক নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে ব্যালট পেপার ও ভোট বাক্স ছিনতাই ও সংঘর্ষের ঘটনায় নির্বাচন স্থাগিত ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। পরবর্ত্তীতে চলতি বছরের ১৩ই জুুলাই পুন: নির্বাচন ও ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জাফর ইকবাল মানিক বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়। তবে তথ্য গোপন করে নির্বাচনে অংশ নেয় জাফর ইকবাল মানিক। তিনি ২০১২ সালের জুলাই মাসে তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আল-মোতালিব ট্রেডার্সের নামে স্থানীয় ব্রাক ব্যাংক হতে ১২ লক্ষ টাকা ঋন গ্রহন করেন। সঠিক সময় ঋন শোধ না করায় ব্যাংক তাকে ঋন খেলাপি ঘোষনা করে আদালতে মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কতৃপক্ষ। পুন: নির্বাচনের পর হলফ নামায় তথ্য গোপন করে নির্বাচন করার বিষয়টি প্রকাশ হওয়া এলাকায় মিত্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিদন্ধী প্রার্থী ফারুক গেজেট প্রকাশে স্থাগিতাদেশ চেয়ে নির্বাচন কমিশন অভিযোগ দায়ের করেন। একই সাথে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বিষয়টি নিস্পতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে রুল জারী করেন। রুলে বিষয়টি নিস্পতি করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে গেজেট প্রকাশ করেন।
চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়া প্রার্থী মোঃ ফারুকুল ইসলাম ফারুক বলেন, মানিক ঋন খেলাপি। ব্যাংক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। নির্বাচনী বিধি বিধান অনুযায়ী সে ডিসকোয়ালীফাই। নিকটতর্ম প্রতিদদ্ধী হিসেবে আমি বিজয়ী। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কতিপয় দূনিতিবাজ কর্মকতারা আর্থিক সুবিদা নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে।
মামলার বাদী ব্যাক ব্যাংক ম্যানেজার সাইদুর রহমান সংবাদিকদের বলেন, জাফর ইকবাল মানিক ব্যাংক থেকে ১২ লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছে। ব্যাংক এখনো ৫ লক্ষ ছয় হাজার তিন শত বার টাকা পায়। ২০১৫ সালে ব্যাংক তাকে ঋন খেলাপি ঘোষনা করেন।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু রেজা মুহাম্মদ দেলোয়ারুল হক বলেন, ঋন খেলাপি হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া বৈধ নয়। সে অনুযায়ী তার প্রার্থীতা বাতিল হবে। এখন বিষয়টি কমিশন ও আদালত সিদান্ত দিবেন।
এদিকে নির্বচনের জটিলতা না কাটায় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দাঙ্গা হাঙ্গামা লেগেই আছে। এরই জের ধরে সম্প্রতি বিজয়ী চেয়ারম্যানের সমর্থকরা প্রতিদন্ধী সমর্থকদের অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে ভাংচুর চালায়। আহত হয় বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে রায়পুরা থানায় মামলা দায়েল হয়েছে। এর আগে বিজয়ী চেয়ারম্যানের গুলিতে প্রতিদন্ধী প্রার্থীর সমর্থক জিয়াউর রহমান জিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।