লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদী মরজালে নিজ ঘরে নিজের ৮ মাসের শিশু সন্তানকে জবাই হত্যা করলেন পাষান্ড বাবা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ দিকে রায়পুরা উপজেলার মরজালে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে রায়পুরার থানা পুলিশ। ঘটনার পরে মাদকাসক্ত বাবার পালাতক রয়েছে। তার বাড়ি নরসিংদীর সদর উপজেলা আলোকবালীর বাখারনগরে বাবুল মিয়ার ছেলে।
এই ঘটনায় মাহিনের এই ঘটনায় চাচা ও দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহত শিশুর নাম মাহিন (৮ মাস) । সে আপন মিয়া ও মারুফা আক্তারের শিশুপুত্র।
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, প্রায় ২ বছর আগে সদর উপজেলার আলোকবালীর বাখারনগর এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে আপনের সাথে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা নবীনগরের বড়াই এলাকার মারুফা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই আপন তার স্ত্রীকে মারধর করতো। এই কারনে মারুফা তার বাবার বাড়িতে থাকত। গত ঈদের কিছুদিন আগে মারুফাকে তার শ^শুর তাদের বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে আসে। কিন্তু তাদের ঝগড়া থামে না। আপন কিছুদিন বিদেশ ছিলো। বিদেশ থেকে এসে সে আর কোন কাজ করেনি। বিয়ের পরও এভাবেই চলতে থাকে। আর ধীরে ধীরে সে মাদক সেবী হয়ে উঠে। মাদকের কারনেই তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আর প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার কারনেই প্রাণ দিতে হলো অবুঝ শিশুকে।
নিহতের মা মারুফা আক্তার বলেন, গত ২০১৬ সালে জুলাই মাসের ১৫ তারিখে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আমাকে শশুরবাড়ির লোকজন নিযার্তন করত । নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে আমার বাবার সাথে বাড়ি নবীনগর বড়াই গ্রামে চলে যায়। গত রবিবারে শশুর আমার বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে। ঘটনার রাতে তাকে বলেছি তুমি কাজ-কর্ম না করলে বাবুকে কি খাবাব এই ছিল আমার কথা। আমি যখন বাইরের কাজ শেষে ঘরে গিয়ে দেখি আমার স্বামী আর আমার দেবর কেউই ঘরে নেই। আর আমার বাচ্চাটার রক্তাক্ত দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে। কি দোষ ছিলো আমার অবুঝ বাচ্চাটার? তাকে কেন এমন ভাবে মারলো আমার স্বামী! তারতো কোন দোষ ছিলো না। আমার অবুঝ বাচ্চাটাকে যে এবাবে খুন করেছে আমি তার বিচার চাই।
রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রী ঝগড়ার কারনে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের মা সরাসরি বলছে তার স্বামী এই হত্যাটি ঘটিয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এই ঘটনায় জিঞ্জাসাবাদের জন্য নিহতের চাচা ও দাদাকে আটক করেছি।
শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের শেষে তার লাশ নিহতের মার কাছে হস্থাতর করা হবে। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়াধিন চলছে।