নিউজ ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার ১৩ মার্চ ২০১৮:
সাংবাদিক সুমন হাসানকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ৮ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ।
মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ চকবাজারের পুরাতন বিউটি হলের সামনে ডিবি পুলিশ একটি বাসায় অভিযান চালালে সাংবাদিক সুমন হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অভিযানের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ৮ পুলিশ সদস্য মিলে সুমনের উপর চড়াও হয়। এ সময় সুমনকে বেধড়ক মারধর ও অণ্ডকোষ চেপে ধরে অজ্ঞান করে ফেলে। পরবর্তীতে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে জ্ঞান ফিরলে পুনরায় তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য সকলকে তার কক্ষে নিয়ে আসেন। এ সময় সুমনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও সুমনের কাছে নির্যাতনের কথা শুনে উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফ ও উত্তম কুমার পাল সাংবাদিক মহলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তারা নির্যাতনের সাথে জড়িত ডিবি পুলিশের এসআই আবুল বাশার ও তার টিমকে তাৎক্ষণিক ক্লোজড ও ওই টিমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানান তারা।
নির্যাতনের শিকার বেসরকারি টেলিভশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের ক্যামেরা পার্সন সাংবাদিক সুমন হাসান বলেন, ‘বিউটি হল সংলগ্ন একটি বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের কাছে অভিযানের বিষয়টি জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের এসআই আবুল বাসার, তার টিমের সদস্য সাইফুল, মাসুদ ও আলতাফসহ ওই টিমের সকলে আমার সঙ্গে চড়াও হয়। এ সময় আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে এবং ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোড় জবরদস্তি করতে থাকে। এ সময় ডিবি পুলিশ আমার বাসায় মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেয়াসহ ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়া হয়। তবে আমি বিনা অপরাধে সেখানে না যাওয়ার জন্য বললে তারা আমার অন্ডকোষ চেপে ধরে এবং সঙ্গে সঙ্গেই আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। তারপর আমাকে ডিবি অফিসে নিয়ে বুকের উপর লাথি দেয়াসহ নানা কায়দায় নির্যাতন শুরু করা হয়।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক জানান, বিষয়টি দুঃখ জনক। প্রাথমিকভাবে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়ায় এসআই আবুল বাশারসহ তার টিমের মোট ৮ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। যার মধ্যে দুইজন এএসআই ও বাকিরা কনস্টেবল।
এদিকে এই ঘটনায় শহীদ আব্দুর সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব, মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, বরিশাল ফটো সংবাদিক ঐক্য পরিষদসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।