স্পোর্টস ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,শুক্রবার, ১৬ মার্চ ২০১৮:
শেষ ওভারে প্রয়োজন ১২ রান। টান টান উত্তেজনা। দ্বিতীয় বলে রানআউট হয়ে গেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। স্ট্রাইকে থাকার কথা মাহমুদউল্লাহর। কিন্তু আম্পায়ার তাকে স্ট্রাইকে দেবেন না। এ নিয়ে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মাহমুদউল্লাহ আর রুবেলকে উঠে আসতে বললেন।
আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারিসহ অন্য কর্মকর্তারা থামালেন। স্ট্রাইকে থাকলেন মাহমুদউল্লাহই। তৃতীয় বলেই মারলেন বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে দুই রান। আর প্রয়োজন ৬ রান। পঞ্চম বলে ইসুরু আদানাকে ছক্কা মেরেই বাংলাদেশকে ২ উইকেটের ব্যবধানে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিলো ওপেনার তামিম ইকবাল। তবে তার সঙ্গী লিটন দাস গত ম্যাচের মতো আজও ব্যর্থ। আউট হওয়ার আগে করে ৩ বলে ০ রান। লিটনের পরে উইকেটে নেমেই পরপর দুই বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। কিন্তু আকিলা ধনঞ্জয়ার পরের ওভারে এসেই সাজঘরে ফেরেন সাব্বির। এগিয়ে এসে খেলতে গেয়ে বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি সাব্বির। তার প্যাড ছুঁয়ে যাওয়া বল গ্লাভসে জমিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন কুশল পেরেরা। সাজঘরে যাওয়ার আগে করে ৮ বলে ১৩ রান।
দলীয় ৩৩ রানেই ২ উইকেট হারানোর পর তামিম ইকবালের সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি পর আগের দুই ম্যাচের নায়ক মুশফিকুর রহিম এবার ফেরেন ২৫ বলে ব্যক্তিগত ২৮ রান করে। সাবাই যখন আসা যাওয়ার মিছিলে তখন দলকে একাই টেনে রেখেছে ওপেনার তামিম ইকবাল। অনেকটা ধীর গতিতেই পিচে আটকে থেকে ফিফটি তুলে নেন তামিম। ৪১ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ফিফটি করেন তিনি। ফিফটির পর তার কাছ থেকে দারুণ কিছু প্রত্যাশা ছিল টাইগার ভক্তদের। কিন্তু ইনিংসের ১৪তম ওভারের শেষ বলে অফ স্পিনার ধানুশকা গুনাথিলাকাকে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক কুশল পেরেরা হাতে তালুবন্দি হয়। তামিমের মতোই সাজঘরে ফিরে সৌম্য সরকার। এরপর বিপদের সময় দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার ব্যাটিংয়ে ভড় করে বাংলাদেশ জয়ের বন্ধরে পৌছে যায়।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে শুরুটা ভালো করেত পারেনি শ্রীলঙ্কা। নিদাহাস ট্রফিতে ফিরে অধিনয়াক সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম ম্যাচেই ভাগ্যকে পাশে পান। শুরুতেই বোলিং করতে আসে সাকিব আল হাসান। প্রথম ওভারে ৪ রান দিয়ে ওভার শেষ করে। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই বোলিংয়ে এসে সাফল্য এনে দেন সাকিব আল হাসান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই সাকিবকে লং অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠাতে চেয়েছিলেন গুনাথিলাকা। কিন্তু ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় সেটি সাব্বির রহমানের হাতে তালুবন্দি হয় তিনি। আউট হওইয়ার আগে করে ৭ বলে মাত্র ৪ রান।
সাকিবের পরেই লঙ্কা শিবিরে আঘাত হানে মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারেই বোলিং করতে এসেই উইকেট পান এই কাঁটার মাস্টার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে লঙ্কান ওপেনার কুশাল মেন্ডিসকে সাজঘরে পাঠান মুস্তাফিজ। সাজঘরে ফিরার আগে করে ১৪ বলে ১১ রান। এরপর লঙ্কা শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানার পর মুস্তাফিজুর রান আউটের ফাঁদে ফেলেছিলেন উপল থারাঙ্গাকেও। নিজের প্রথম ওভারেই মেডেন উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় ওভারে আরও ভয়ঙ্কর তিনি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে থারাঙ্গার রানআউটের পর চতুর্থ বলে গোল্ডন ডাক মেরে মাঠ ছাড়েন দাসুন শানাকা। মুস্তাফিজের অফ কাটার বুঝতে না পরে ধরা পড়েন তিনি। মুস্তাফিজের কাটার শানাকার ব্যাটের কানা স্পর্শ করে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে বন্দি হয় তিনি। অলরাউন্ডার জিবন মেন্ডিসকে ফিরিয়েছেন মিরাজ। শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হন জিবন। আউট হওয়ার আগে করে ১১ বলে ৩ রান।
সবাই যখন ব্যাট হাতে ব্যার্থ তখন লঙ্কান দলে রানের চাকা সচল রাখেন কুসল পেরেরা ও থিসারা পেরেরা। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১০০ রান করতে মাত্র ৩ রানের দুরে ছিলেন কুশল ও থিসারা পেরারা। উইকেটে দুর্দান্ত হয়ে উঠা কুশল পেরেরাকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন সৌম্য সরকার। কুসাল আউট হওয়াড় আগে করে ৪০ বলে ৬১ রান। কুশাল পেরার পর সাজঘরে পথে হাঁটেন থিসারা পেরেরাও। তিনি করেন ৩৭ বলে ৫৮ রান।