এ,আর কামাল শেখ, নরসিংদী প্রতিদিন,শনিবার,১৭ মার্চ ২০১৮:
আড়াইহাজারে কোচিং বাণিজ্যের হাতে জিম্মি শিক্ষর্থীরা নারায়নগঞ্জ আড়াইহাজার উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত ছেয়ে গেছে কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত নীতিমালা-২০১২ উপেক্ষা করে বিভিন্ন নামে কোচিং খুলে অবাধে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। যেনো জেলা শিক্ষা অফিস দেখেও যেন দেখেন না। আর এই কোচিং বাণিজ্যের কারণে উদ্বেগ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত অর্থলোভী এক শ্রেনীর অসাধু শিক্ষকরা এ ব্যবসা খুলে বসেছেন উপজেলার প্রায় সব স্কুলেই।
প্রথম থেকে পঞ্চম ও ষষ্ট থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সু কৌশলে কোচিং পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগে বিভিন্ন প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকরা কোচিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও, এখন সরকারী আধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাই স্কুলসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এ কোচিং ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। স্কুল থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় শিক্ষকরা সেন্টার খুলে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় শিক্ষা অফিসের নিরব ভূমিকাকে ভিন্ন চোখে দেখচ্ছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। কোনো কোনো শিক্ষক নিজের কর্মরত স্কুলের ক্লাসে কোচিং পড়াচ্ছেন।
অভিভাবকরা মনে করেন কোচিংয়ের কারনে বাচ্চারা ঠিক মতো বাসায় পড়ার টেবিলে বসেনা,আমরা এক প্রকার কোচিং এর গ্যাড়াকলে পড়ে আছি , কেনা না ছাত্র ছাত্রীর ফলাফল নির্ভর করে শিক্ষকের উপরে।
এ বছর কোচিং ফি’ও দ্বিগুণহারে বেড়ে গেছে। প্রতি মাসে প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম ৫শ’ থেকে ৬শ’টাকা। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ৮শ’ থেকে ১হাজার টাকা’ অষ্টম থেকে দশম শ্রেণিতে ১৮শ’ থেকে থেকে ২ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিাবকরা জানান, স্কুলের শিক্ষকরা শুধু বইয়ের অধ্যায় ধরে পড়ান। ক্লাসে কোনো পড়া বুঝিয়ে দেন না। ফলে পঞ্চম ও অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলের কোচিং শেষ করে অন্য স্কুলের শিক্ষকের কাছে বা তাদের কোচিং সেন্টারে গিয়ে পড়ছে। সেখানে বাংলাসহ সব বিষয়ে কোচিং করানো হয়।
অভিভাবকরা সন্তানের ভালো ফলের আশায় এক কোচিং থেকে অন্য কোচিংয়ে ছুটে চলছেন। বিশেষ করে এবার প্রাথমিক সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় যেসব স্কুল ভালো রেজাল্ট করেছে, সে সব স্কুলের শিক্ষকরাই কোচিংয়ের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন। আড়াইহাজার উপজেলায় প্রায় শতাধিক কোচিং সেন্টার রয়েছে। জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধ নীতিমালাও রয়েছে সে অনুযায়ী কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারেন না। নীতিমালা অনুযায়ী অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে নিজ বাসায় পড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি প্রয়োজন হয়।
সচেতন অভিভাবকরা বলেছেন, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা কোচিং বাণিজ্যকে আরো উৎসাহিত করেছে। অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের ভালো ফলাফলের আশায় নামি-দামি শিক্ষক ও কোচিং সেন্টারগুলোর পেছনে ছুটে চলছেন। এ সুযোগে শিক্ষার্থী ওঅভিভাবকরা কোচিংবাজ কিছু অসাধু শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এশাধীক অভিভাকরা জানান, উপজেলা সদর স্কুলগুলোতে লেখাপড়া নেই বললেই চলে। পাশাপাশি প্রতিটি স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষকদের সহযোগিতায় ব্যাঙের ছাতার মতো কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে।
এছাড়া বাড়িতেও প্রতিটি বিষয়ে টিউটর শিক্ষক রাখতে হচ্ছে। সামর্থ্যবানরা সন্তানদের সুবিধা দিতে পারলেও স্বল্প আয়ের অভিভাবকদের খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকে প্রাইভেট বা কোচিং কোনোটিই দিতে পারছেন না। ফলে বিত্তবানদের সন্তানরা ভালো ফল করছে। এর কৃতিত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান ভালো না থাকায় সন্তানরা দিন দিন কোচিংয়ের উপর নিরভশীল হয়ে পড়ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস,এম আবু তালেব বলেন, মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালা আড়াইহাজার উপজেলার সব স্কুল গুলিতে পাঠানো হইছে। তার পরেও যদি শিক্ষকরা কোচিংয়ের সাথে জরিত থাকে এমন কোন তথ্য আমার কাছে আসে। তাহলে সে শিক্ষক ও স্কুল এর বিরুদ্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাফেজা খাতুন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোচিং করানোর কোন সুযোগ নেই, কেউ করলে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।