সফুরউদ্দিন প্রভাত,নরসিংদী প্রতিদিন,শুক্রবার,২৩ মার্চ ২০১৮ : নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সংঘর্ষকালে প্রতিপক্ষের ৮-১০টি বাড়িঘরে ভাংচুর চালানো হয়।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের বগারগোত গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে হলেন স্থানীয় বাচ্চু মেম্বারের অনুসারী আরিফ মিয়া, দানিছ, শহর মল্লুক, মঙ্গল আলী, স্কুল শিক্ষার্থী আর্জিনা, হবি মিয়া, জাকারিয়া ও মমিন আলীকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তাদের মধ্যে মঙ্গল আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এছাড়া আহত মোস্তফা মিয়া ও মোক্তার মিয়াসহ বেশ কয়েকজনকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে প্রতিপক্ষ কামালের অনুসারী জমির আলী, আজগর আলী,আমির আলী, জুয়েল, আলমগীরকেও টেটাবিদ্ধ অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে করিমপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও বগারগোত গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন ও একইওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাচ্চু মেম্বারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। এনিয়ে তাদের অনুসারীদের মধ্যে বেশ কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জনসভায় যোগ দেয়ার জন্য নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে মিছিল সহকারে করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদে জমায়েত হয়। ওই সময় আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন ও বাচ্চু মেম্বারের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান হারেছ মিয়া নিয়ন্ত্রণ করলেও সভা শেষে বাড়ি ফেরার পর উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে শুক্রবার সকালে দা, টেটা, বল্লমসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা।
খবর পেয়ে নরসিংদী মডেল থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোজাফফর বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তীতে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।