নরসিংদী প্রতিদিন ডেস্ক, রবিবার, ২৫ মার্চ ২০১৮:
আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবিতে আজ রবিবার (২৫ মার্চ) এক মিনিট নীরবতা পালনের কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে সব আলো নিভিয়ে সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে নীরবতা পালন করবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইট নামে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
নয় মাস যুদ্ধ চলাকালে হত্যা করা হয় ৩০ লাখ মানুষকে। ধর্ষিত হয় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি নারী। গণহত্যা শুরুর এই দিনটিতে শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের। সারা বিশ্বে ৯ আগস্ট গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হলেও সেটি পাল্টে ২৫ মার্চ করতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য জাতিসংঘে দেন-দরবার করছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশে।
জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হবে দিবসটি। আর রাত ৯টার সময় এক মিনিট বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে ‘ব্ল্যাক আউট’ পালনের ঘোষণা এসেছে। শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সভা আয়োজন করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির দাবিতে ২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে নীরবতা পালন করবে। সারা বিশ্বের কাছে আমরা নৃশংস সে গণহত্যার চিত্র তুলে ধরতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব এই গণহত্যার ভয়াবহতার কথা জানে। কিন্তু আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে এই গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায় করা। রুয়ান্ডার গণহত্যার তুলনায় একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা এবং এর ভয়াবহতা কম নয়। আমরা যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে এই জঘন্য গণহত্যা দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাব। আপনারা সব আলো নিভিয়ে এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করবেন।
সভায় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সঠিকভাবে উপস্থাপনের কারণেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দেশের যে বর্বরতম হত্যা পাকিস্তানি বাহিনী চালিয়েছে তা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে ২৫ মার্চও আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।’
অন্যান্য কর্মসূচি: শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সাল থেকেই কালরাত পালনের কর্মসূচি শুরু করে নির্মূল কমিটি। এবারও মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মশাল প্রজ্বালন ও আলোর মিছিল করা হবে। মিছিলটি শেষ হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- গণহত্যার ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যাবিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ইতিমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ আজ বিকাল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।