আন্তর্জাতিক ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন, বুধবার, ২৮ মার্চ ২০১৮:
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে উত্তর কোরিয়া থেকে একটি বিশেষ ট্রেন চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে প্রবেশের পর জল্পনার শুরু। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান শেষ। অবশেষে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের চীন সফর নিশ্চিত করেছে দুদেশ।
সবুজ রঙের উপর হলুদ লাইন আঁকা এই ট্রেনটিতে করে ২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা কিম জং-ইল বেইজিং সফর করেছিলেন বলে জল্পনা জোরদার হয়। কিন্তু বেইজিং বা পিয়ংইয়ং জাপানি গণমাধ্যম থেকে ছড়িয়ে পড়া এ জল্পনা সম্পর্কে কয়েকদিন কোনো মন্তব্য করেনি। শেষ পর্যন্ত চীন ও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত খবর আজ বুধবার নিশ্চিত করা হয়। ২০১১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম কিম আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশ সফর করলেন। দুদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হলো, কিম তার স্ত্রী রি সোল জু’কে নিয়ে গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত চীন সফর করেন।
চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা শিনহুয়াও জানায়, বেইজিং-এ কিম জং-উন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ করেছেন। শিনহুয়া জানায়, কিম বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের প্রচেষ্টায় সদিচ্ছা নিয়ে সাড়া দেয়, তাহলে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার বিষয়টির সুরাহা হবে।’
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কিম
আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক উত্তেজনার মূলে ছিল পিয়ংইয়ং-এর পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি। আলোচনায় উত্তর কোরিয়ার নেতা চীনা প্রেসিডেন্টকে এই নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছেন। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে এ সফরকে ‘মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উত্তর কোরিয়ায় ফিরতি সফরে যেতে সম্মত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে।
বেইজিং-এর একটি সড়কে বিশেষ গাড়িবহর যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় চীনা পুলিশ; এই বহরে কিম জং-উন ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়া আলোচনায় বসার যে প্রস্তুতি নিচ্ছে তার প্রেক্ষাপটে কিমের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।
চীনে কিমের গাড়িবহর
কিম জং-উন আগামী মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে কথা রয়েছে। ওই শীর্ষ বৈঠকের আগে কিম চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অন্তত একবার সাক্ষাৎ করে নেবেন বলে পর্যবেক্ষকরা ধারণা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে বৈঠকের স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলে তা হবে উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতার সঙ্গে প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ।
তবে দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক, তাতে বিষয়টি নিয়ে একটু সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।