নিউজ ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার,৩ এপ্রিল ২০১৮: নদীতে ভেসে আসা পরিত্যক্ত গাছের শিকড় দিয়ে জনজীবনের নিত্যব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী তৈরি করেন সংসার চালান তারা। টি-টেবিল, শো-পিস, ফুলদানিসহ নানা ধরনের ব্যবহার্য জিনিসপত্র তৈরি করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন পাহাড়ি এই জনগোষ্ঠী।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে রুমা উপজেলার দুর্গম মুনলাই পাড়ার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এটিকে শিল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাদের তৈরি হস্তশিল্প বেড়াতে আসা পর্যটকদের মাধ্যমে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সংশ্লিষ্টদের মতে, পণ্যগুলোর মান বাড়াতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এই ধরনের শিল্পীরা আরো টেকসই উন্নত সামগ্রী তৈরি করতে পারবে।
সরেজমিনে কথা হলে হস্তশিল্পীরা জানান, পাহাড়, বন, বিভিন্ন ঝিরি ও সাঙ্গু নদীর পাড় থেকে সংগ্রহ করা হয় ভেসে আসা গাছের শিকড়। সেগুলোর আকার-আকৃতি বুঝে কাটছাঁট করে দেয়া হয় শৈল্পিক রূপ। বাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় তিন বছর ধরে এই ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করছেন তেমনই একজন লাল পিয়ান সাং বম।
তিনি জানান, ‘কৃষিকাজের পাশাপাশি গাছের শিকড়ের আসবাবপত্র তৈরি করে বাড়তি স্বচ্ছলতা এসেছে তাঁর সংসারে। বর্ষায় নদী
দিয়ে ভেসে আসা গাছের শিকড় সংগ্রহ করে বিভিন্ন ডিজাইনের ফার্নিচার তৈরি করা হয়। শুধু বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনা নয়, দেশের
জন্য কিছু করার চিন্তা থেকেই এ কাজে সম্পৃক্ত হন তিনি। তবে সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে এই শিল্পকে আরো ব্যাপকভাবে প্রসার করার আগ্রহ রয়েছে তাঁর। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন ছোট হলে তিনটা আর বড় এবং ডিজাইন দিতে গেলে একটা ফার্নিচার বানাতে দুই তিনদিন সময় ব্যয় হয়।
শিকড় দিয়ে বানানো জিনিসগুলো পর্যটকদের কাছে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায় বলে জানান এসব হস্তশিল্প তৈরিকারক ব্যক্তিরা।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এর উপ-ব্যবস্থাপক জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, পাহাড়ি কারুশিল্পীদের এই ধরনের হস্তশিল্প সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সব ধরনের সহায়তা করা হয়। লাল পিয়ান সাংকেও বিসিকের আওতায় এনে নিবন্ধিত করে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।
সূত্র: ব্রেকিংনিউজ ডটকম ডটবিডি/আবুল বশর নয়ন, বান্দরবান প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৮, ০৫:৩২