নিউজ ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার,১৭ এপ্রিল ২০১৮: সাতক্ষীরা সদরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার গৃহিনী সাজিদা খাতুন। জীবনের অনেক কঠিন সময় পার করেছেন তিনি। পোল্ট্রিফার্ম গড়া ও ধান কিনে বিক্রি করাসহ নানা ক্ষুদ্র ব্যবসা বরেছেন তিনি। সচ্ছলতা আসেনি। বছর তিন আগে পাশের গ্রাম থেকে এক জোড়া টার্কি মুরগি কিনে আনেন তিনি।
টার্কির বয়স ছয়-সাত মাস যেতে না যেতেই ডিম দেওয়া শুরু হয়। পরের গল্পটা সুখ ও সমৃদ্ধির। সেই এক জোড়া টার্কি মুরগি থেকে এখন তিনি কয়েক শত টার্কির মালিক।
প্রতিমাসে ডিম ও টার্কি মুরগি বিক্রি করে তার ভালোই আয় হয়। এখন বাণিজ্যিকভাবে টার্কির খামার করেছেন তিনি।
সাজিদা খাতুন বলেন, খামারে বড় ধরনের কোনো অসুখ এখন পর্যন্ত হয়নি। টার্কির রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব বেশি। ছয় মাসের একটি পুরুষ টার্কির ওজন হয় পাঁচ-ছয় কেজি এবং স্ত্রী টার্কির ওজন থাকে তিন-চার কেজি।
তিনি জানান, ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ২৮ দিনে টার্কির ডিম ফুটানো যায়। এ ছাড়া বর্তমানে দেশি মুরগির মাধ্যমে টার্কির ডিম ফোটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সাজিদা খাতুন জানান, তিনি এক মাসের টার্কির বাচ্চা জোড়া হিসেবে বিক্রি করেন আড়াই হাজার টাকায়। প্রতিটি ডিম বিক্রি করেন ২০০ টাকায়।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা, খুলনা, যশোর, বরিশাল ও পিরোজপুরসহ দেশেরে বিভিন্ন স্থান থেকে টার্কি মুরগি কিনতে ক্রেতারা আসেন। সাজিদা খাতুন বলেন, টার্কির মাংসের সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এর উৎপাদন খরচ তুলনামুলক কম। তাই টার্কি পালন বেশ লাভজনক। টার্কির প্রধান খাবার ঘাস। তবে পাতাকপি, কচুরিপানা এবং দানাদার খাবারও খেয়ে থাকে এরা। তিনি বলেন, প্রতি কেজি ৩০০ টাকা ধরা হলে ছয় কেজির একটি টার্কির দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০০ টাকা। ব্যাংক লোন পেলে ব্যবসা বড় কারার ইচ্ছা ও পরিকল্পনার কথা জানান সাজিদা খাতুন।
ভারত থেকে নিন্মমানের টার্কির বাচ্চা দেশে আসছে বলে জানান তিনি। একটি চক্র এ কাজটি করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের বাচ্চা মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, নিন্মমানের বাচ্চা চেনার বিশেষ কোনো উপায় নেই। বিশ^স্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি থেকে বাচ্চা সংগ্রহের পরামর্শ দেন তিনি।
সাজিদা খাতুন জানান, অনেকেই আগ্রহ নিয়ে তার কাছে টার্কি সম্পর্কে জানতে আসেন। সাতক্ষীরার অনেক খামারি টার্কি পালনে আগ্রহী। কিন্তু এর ডিম ও বাচ্চা সহজলভ্য নয়। এ বিষয়ে জ্ঞানের পরিসরও কম। তাই খামার স্থাপন করতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সমরেশ চন্দ্র দাশ বলেন, টার্কি আমাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একটি নতুন প্রজাতি। অনেকদিন ধরে সাতক্ষীরাতে টার্কি লালন-পালন করা হচ্ছে। এটি একটি লাভজনক ব্যাবসা। এ কারণে খামারিরা এ ব্যবসায় ঝুঁকছেন। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে টার্কি খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং সহযোগিতা করা হয়।