শরীফ ইকবাল রাসেল*
নরসিংদী প্রতিদিন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮:
নরসিংদী জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেছেন, আমাদের শিকড় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। আর সেই শিকড়কে ভুলে গেলে চলবেনা। কারন মানুষ যদি তার শিকড়কে ভুলে যায় তখন কিন্তু সামনে আগাতে পারেনা। আর সেই লক্ষ্যে নরসিংদী প্রতিটি বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার তৈরী করতে হবে। যার নির্দেশনা আমরা ইতিমধ্যেই দিয়েছি। নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় সূধী জনের সাথে এক মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বল
মঙ্গলবার পলাশ উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের আয়োজনে উপজেলা মাল্টি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রুল মডেল হিসেবে আছে সারাবিশ্বে। আর সেজন্য আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে হাটছে বাংলাদেশ। আর সরকারের এই উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো জনসম্মুখে বেশী করে প্রচার করতে হবে। সেই লক্ষে স্থানীয় পত্রিকা গুলোর ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, সমাজ উন্নয়নে স্থানীয় পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তাই আমি স্থানীয় পত্রিকা পাঠে অনেক কিছু জানতে পারি। অনেক ভালো ভালো সংবাদ প্রচার হচ্ছে।
নারীদের নিরাপত্তা বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নারীদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরী করতে হবে। তাহলে দেশের উন্নয়ন সমানতালে এগিয়ে যাবে। মানুষের পাশাপাশি নারীদের নিরাপদ আবাসস্থল, কর্মস্থল, পথস্থল তৈরী করতে হবে। আমাদের চিন্তা চেতনা আর বিবেক দিয়ে। কারন নারীরা কেউ মা, কেউ বোন, কেউ মেয়ে আবার কেউবা স্ত্রী। তাদের সম্মানের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
এসময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের লক্ষ করে তিনি বলেন, আমি সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলাই পছন্দ করি। তাই মনে করতে হবে আমি প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে কোনো অভিযোগ শুনতে চাইনা। দেশের সাধারন মানুষরা কোনো সুপারিশ নিয়ে আসেনা। সুপারিশ নিয়ে আসে ধনাঢ্যরা। তাই আমি একমাত্র আল্লাকে ভয় পাই। আর প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা ছাড়া আর কোনো আপোষ নেই। তাই সকলের প্রতি সদয় হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি পলাশ উপজেলা বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে মুক্তিযোদ্ধা কর্নার উদ্বোধন করেন এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। বিকেলে খানেপুর এলাকায় ঘোড়াশাল পৌর ভূমি অফিসের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার্থীদের খোজখবর নেন। এছাড়া ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও সুধীজনের সাথে মত বিনিময় করেন জেলা প্রশাসক।
সন্ধায় পলাশ উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
সন্ধায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর একঝাক শিল্পীর নৃত্যের ছন্দের তালে তালে সূর যতদ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তত দ্রুত অডিটরিয়াম লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পির সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন। এছাড়া উপস্থিত থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুল ইসলাম, ঘোড়াশার পৌরসভার মেয়র শরিফুল হক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মাসুদুর রহমান, সহকারী কমিশনার মো. শাহ আলম, আরাফাত মোহাম্মদ নোমান, লুবনা ফারজানা, তাহমিনা আক্তার, পলাশের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান শামীম, ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক আল মুজাহিদ হোসেন তুষার, জিনারদী ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম গাজী, ডাঙ্গার ইউপি চেয়ারম্যান সাবের উল হাই, চরসিন্দুরের ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন রতন, গজারিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান বদরুদজ্জামান ভূইয়া সহ বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সবশেষে চন্দনা মজুমদার ও কিশোর গ্লোডিয়াশের কন্ঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।