লক্ষন বর্মন,নরসিংদী প্রতিদিন, ১৪ মে সোমবার ২০১৮ : নরসিংদীর শিবপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। ওই সময় হামলাকারীরা সাত হাজার ইউরো ও ২১ ভরি স্বর্নালঙ্কার সহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নেয়। এসময় হামালাকারীরা প্রাবাসীকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে নেয়। এ ঘটনায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে শিবপুর থানায় মামলা দায়ের করলেও কাউকে প্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি দিয়ে আসছে। ঘটনার পর থেকেই হামলাকারীদের ভয়ে প্রায় দুই মাস ধরে নিজ বাড়িতে যেতে পারছেননা ভূক্তভোগী পরিবার। তাই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে গ্রাম জুড়ে।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, প্রায় ৮ বছর যাবত ইটালীতে বসবাস করেছেন শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চলনদিয়া গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে আজিজ। বিদেশে অর্জিত অর্থ দিয়ে বাড়ি নির্মান করেন প্রবাসী এই পরিবার। বাড়ী নির্মানের পর থেকেই এলাকার একটি চক্র প্রবাসীর পরিবার থেকে টাকা দাবী করে আসছিল। টাকা না দিলেই ভয়ভিতি সহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল। প্রতিবাদ করলেই চালাতো নানা নির্যাতন । সর্বশেষ টাকা দিতে অস্বীকৃতি করায় একই এলাকার মজনু ও মোশারফের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জন লোক অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালায়। ওই সময় হামলাকারীরা বাড়ির আসবাপত্র সহ ভেতরে থাকা জিনিস পত্র ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ওই সময় হামলাকারীরা নগদটাকা ও স্বর্নালঙ্কার সহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে শিবপুর থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে নিয়ে আসেন।
প্রবাসী মা রোকেয়া বেগম বলেন, বাড়ী করাই আমাদের কাল হয়েছে। বাড়ী নির্মানের পর থেকেই মজনু ,মোশারফ,আইনউদ্দিনরা আমার নিকট টাকা দাবী করে আসছে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমাদের বাড়ীতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
মামলার বাদী মতি মিয়া বলেন, এত বড় ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখন পযর্ন্ত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো মজনু, মোশারফদের অব্যাহত হুমকির মুখে আমরা বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাড়ীতে আসলেই আমাদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো সহ আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
এলকাবাসী বাচ্চু মিয়া বলেন, সন্ধার পর পর হঠাৎ বিকট শব্দ। দৌড়ে এসে দেখি ৭০/৮০ জন লোক গেইট ভাংছিল। পরে তারা বাড়ীর ভেতরে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মজনু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন,আমিই আজিজকে বিদেশে পাঠিয়েছি। বিদেশ থেকে এসে সে আমার বাবা ও ভাতিজাকে মারধর করে। বাহির থেকে সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমাদের বাড়ীর লোকজনকে ভয় দেখায়।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোমেনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত শেষে মামলাটি অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি চলছে। একই সাথে আসামী গ্রেপ্তারের অভিযানও অব্যাহত।