লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার ১৯ জুন ২০১৮: নরসিংদীর শিবপুরের কারারচরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রবিন মিয়া (১৬) নামের এক ১০ম শ্রেণির ছাত্র ও আর্জেন্টিনার সমর্থককে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষ ব্রাজিল সমর্থকরা। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কারারচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত রবিন মিয়া (১৬) কারারচর মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির কমার্সের ছাত্র ও শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ কারারচর এলাকার ইকবাল মিয়ার ছেলে। এই ঘটনায় রবিনের চাচা আল-আমিন বাদী হয়ে আজ দুপুরে শিবপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আহত রবিনের মা আফিয়া বেগম জানান, গতকাল সোমবার বিকেলে আমার ছেলে কারারচর মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। সেখানে আমার ছেলে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে ১ গোল করে ব্রাজিল দলকে হারায়। এসময় ব্রাজিল দলের আব্দুলের সাথে এই গোল করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। খেলা শেষে আমার ছেলে বাড়ি ফিরে এলে সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে আব্দুল ও মাসুম তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রবিনকে আমাদের বাড়ির পেছনে নিয়ে ১০/১৫জন মিলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে, দুই হাতে, মাথায় ও গলায় কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। সেখান থেকে আমার ছেলে কোন রকমে প্রাণ নিয়ে বাড়িতে আসলে তাকে আমরা নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করিয়েছি। তার অবস্থা বেশি ভাল নয়। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
আহত রবিনের সাথে কথা বলতে গেলে গলায় কুপানোর আঘাত থাকার কারনে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারছিল না। অনেক কষ্টে সে আস্তে আস্তে জানায়, ফুটবল খেলায় আমি গোল করার পর আব্দুলের সাথে ঝগরা হয়। এই কারণেই সে আরো ১০/১৫জন নিয়ে আমাকে আমাদের বাড়ির পেছনে কলা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে এলোপাথারী পেটায় ও কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। আমি অনেক আকুতি করার পরও তারা আমাকে ছাড়েনি। এসময় আমার কাছ থেকে একটি মোবাইল ও ২০হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে আমি কোন রকমে বাড়িতে আসলে সবাই মিলে আমাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত জানতে চাইলে সে জানায়, কোনাপাড়া এলাকার আব্দুল, মাসুম, রাকিবুল, শাহীন, বিদুন, ইউসুফ, মান্নান, খাইরুল, আরিফুল ও ওবায়দুলসহ ১০/১৫জন সেখানে ছিল।
রবিনের বড় ভাই রিপন মিয়া বলেন, খেলা নিয়ে এধরণের সহিংসতা কারো কাছে কাম্য নয়। যারা আমার ভাইয়ের এ অবস্থা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই ঘটনায় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। আসামী ধরার ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।
#