নারায়ণগঞ্জ থেকে,নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার,১০ জুলাই ২০১৮:
নারায়ণগঞ্জ শহরে নিখোঁজের ২২ দিন পর স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের (৭০) খণ্ডিত এবং গলিত লাশ উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সোমবার (০৯ জুলাই) রাত ১১টায় শহরের আমলপাড়া এলাকার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পাঁচ টুকরা করা লাশটি বস্তায় ভর্তি অবস্থায় ছিল। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষ শহরের কালীরবাজারের ভোলানাথ জুয়েলার্সের মালিক।
এই ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতাররা হলেন- নারায়ণগঞ্জ নগরীর কালিরবাজারের আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী পিন্টু সরকার (৩৫) ও তাঁর দোকানের কারিগর বাপেন ভৌমিক (২৪)। প্রবীরের লাশ যে বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় গ্রেফতার ব্যক্তিরা ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে আর্থিক লেনদেনের বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) নুরে আলম বলেন, প্রবীর চন্দ্র নিখোঁজের ঘটনায় পিন্টু সরকার ও বাপেন ভৌমিককে সোমবার সকালে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই দুজনকে নিয়ে নগরীর আমলাপাড়া এলাকার রাশেদুল ইসলাম ঠান্ডুর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। মোট তিনটি বস্তায় ৫ টুকরো লাশ পাওয়া যায়।
নুরে আলম বলেন, ১৮ জুন রাতে প্রবীর চন্দ্রকে ওই বাড়িতে হত্যা করা হয়। প্রবীর চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে পিন্টু সরকারের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, টাকা লেনদেনের জের ধরে এ হত্যা। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পিন্টু সরকার ও তাঁর দোকানের কারিগর বাপেন সরকার ওই ভাড়া বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ জুন নারায়ণগঞ্জ নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন প্রবীর চন্দ্র ঘোষ। নিখোঁজের তিন দিন পর নিহতের ছোট ভাই বিপ্লব চন্দ্র ঘোষের মুঠোফোনে এক কোটি টাকা চেয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
তার সন্ধান দাবিতে ২২ দিন ধরে বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ী, নিহতের স্বজন, বিভিন্ন সংগঠন ও পরিবারের লোকজন মানববন্ধন ও সমাবেশ করে আসছিল। এর মধ্যে নিহতের পরিবার প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন।
এছাড়াও নিখোঁজের ঘটনায় নিহতের বাবা ভোলানাথ দাস বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি করেছিলেন। ওই জিডির তদন্তের দায়িত্বের ভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেয়া হয়।