লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন, ১৯ আগস্ট, রবিবার ২০১৮: কোরবানী ঈদকে ঘিরে কামার দোকানগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। ক্রেতাদের চাপ সামাল দিতে দিন-রাত কাজ করছেন কামাররা। ক্রেতাদের চাহিদা মতো বাড়তি কাজের জন্য বাড়তি সময় কাজ চলছে কামারশালায়। পাশাপাশি চলছে হাট বাজারের খুচরা দোকানীদের জন্য লোহার অস্ত্রপাতি তৈরির কাজও। তবে লোহার দাম বাড়তি থাকায় লাভের পরিমান কম বলে জানিয়েছেন কামাররা।
বেশি দিন বাকি নেই ঈদ-উল আযহার। তাই ব্যস্ততা বেড়েছে নরসিংদীর প্রত্যেকটি উপজেলার কামার দোকানগুলোতে। একদিকে কোরবানির ক্রেতাদের চাপ, অন্যদিকে নিয়মিতভাবে খুচরা দোকানের জন্য লোহা-লক্কড়ের যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হচ্ছে তাদের। সারা বছরে টুকটাক কাজ থাকলেও ঈদ-উল আযহার এই সময়টায় ব্যস্ত সময় পার করতে হয় তাদের। উপলক্ষকে ঘিরে লাভের আশায় তাই দিন-রাত কাজ করে চলেছেন তারা। তৈরী করছেন ছোট ছুড়ি, মাঝারি ছুড়ি, জবাই করার ছুড়ি, দা, বঁটি, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধরণের কোরবানীর কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র। এগুলো আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত।
নরসিংদী বাজারের কামারশালার রিপন কর্মকার জানান, এই মুহুর্তে কাজের চাপ অনেক বেশী। ঈদের আগের দিন চাঁদ রাতে সব কাজ শেষ করে ফেলতে হবে, তাই অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। এছাড়া এই কোরবানী ঈদটাই হচ্ছে আমাদের বছরের একটি সিজন। এই সিজনটাতেই আমাদের বেচাকেনা একটু বেশী হয়। খুচরা ও বিভিন্ন দোকানে কোরবানীর অস্ত্র এই মুহুর্তে কিছু কিছু বিক্রি হচ্ছে। আশা করি ঈদের আগের দিন চাঁদ রাতে প্রায় সব অস্ত্র বিক্রি হয়ে যাবে।
বিকাশ কর্মকার বলেন, এসব অস্ত্রের চাহিদা থাকলেও লোহার মূল্য ও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বেশী হওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছিনা। তাই এই খাতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। নতুবা এই শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এছাড়া তিনি আরো বলেন, আমরা ছোট, মাঝারি ও বড় ছুড়ি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ কোরবানীতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র তৈরী করছি। বিভিন্ন আকারভেদে ৫০টাকা থেকে প্রায় দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত এসব অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে।
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ্-আল মামুন বলেন, এসব কর্মকাররা কোন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকায় তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্মকারদের এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে তাদের প্রযুক্তির আধুনিকায়নসহ একটি সংগঠনের নিচে আসতে হবে। এছাড়া সরকারী সহযোগিতাও এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে আগামী এসএমই মেলায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
জেলার সকল কামারদের একই ছাতার নিচে একত্রিত করে তাদের প্রযুক্তির আধুনিকায়নসহ সরকারীভাবে সহযোগিতা করা গেলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।