লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন, ১৯ আগষ্ট রবিবার ২০১৮: আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারো নরসিংদীর খামারীরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। শেষ মুহুর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার খামারীরা। তবে বিদেশী গরু আমদানি না হলে এবছর পশু বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন খামার মালিকরা।
দেশের বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে ৬ মাস ও ১ বছর আগে থেকে গবাদি পশু লালন পালন শুরু করেন নরসিংদীর খামারীরা। কোরবানির ঈদকে ঘিরে অসাধু গরু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করলেও এখানকার খামার গুলোতে দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে এসব গরু গুলোকে।
শিবপুর উপজেলার মুন্সেফেরচরের গরু খামারি কিবরিয়া গাজী বলেন, দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করায় এই অঞ্চলের গরুর চাহিদা অনেক বেশি। আর তাই ঈদের বেশি দিন সময় না থাকায় গরুর যতেœ এখন ব্যস্ত সময় পার করছি আমরা। আমার খামারে প্রায় একশত গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। মানব দেহের ক্ষতি হবে এমন কোন ঔষধ ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। গরু কিনে মোটাতাজা করা পর্যন্ত প্রতিটি গরুতে ৫০হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ১লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৫লক্ষ টাকা মূল্যের গরু প্রস্তুত করা হয়েছে।
রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া গ্রামের গরু খামারি মুজিবর শিকদার বলেন, অমার খামারে ৫০টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গরু সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গরুকে কাঁচা ঘাস, খড়, তিলের খৈল, ছোলার খৈল, মসুুরী ডালের খৈল, মটরসহ বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে। তবে এবার ঈদে বিদেশী গরু সম্পূর্ণরূপে আমদানী বন্ধ করা গেলে এবার ঈদে লাভবান হবেন লাভবান হব আমরা। এছাড়া এবছর ভাল বিক্রি হলে আগামীতে গরু খামারের মাঝারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তরা আরো খামার তৈরীতে আগ্রহী হবে।
নরসিংদী জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান জানান, পশু মোটাতাজাকরণে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঔষধ ব্যবহার বন্ধে মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের প্রত্যেকটি কর্মকর্তা। জেলায় উৎপাদিত পশু নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যজেলায় রপ্তানী সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঈদকে সামনে রেখে জেলায় ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার খামারী দেশীয় পদ্ধতিতে ২৬ হাজারের বেশি পশু মোটাতাজা করছেন।