লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন, শুক্রবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮:নরসিংদীর শিবপুরে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর সাথে ২৫ বছরের এক যুবকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার দুপুরে। ডেকোরেটর, খাবারসহ বিয়ের সব আয়োজন প্রায় শেষ। কিছুক্ষণের মধ্যেই বরযাত্রী আসবে। বরযাত্রী আসার আগেই এই বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যবস্থা করেছে শিবপুরের উপজেলা প্রশাসন। আজ শুক্রবার দুপুরে শিবপুরের চক্রধা ইউনিয়নের বৈলাব গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের কনে পিংকি (১৩) বৈলাব গ্রামের মো. আলাউদ্দীনের মেয়ে। সে নোয়াদিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বয়স ১৮ বানিয়ে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। আর বর হলেন একই উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামের আবদুল হাসিমের ছেলে ছাদ্দাম হোসেন (২৫) ।
স্থানীয় একটি সূত্রের মাধ্যমে এই বাল্যবিবাহের খবরটি জানতে পেরে সাংবাদিকরা মুঠোফোনে শিবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায়কে ঘটনাটি জানান। তৎক্ষণাৎ তিনি বিয়ে বন্ধের উদ্যোগ নেন। এইসময় তিনি সাথে নেন শিবপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুফল চন্দ্র গোলদার ও চক্রধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদকে।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, বিয়েবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বরযাত্রী তখনো না আসলেও বিয়ের সব আয়োজন সম্পূর্ণ করা হয়েছে। মেয়ের জন্মসনদের কাগজ দেখতে চাইলে কনেপক্ষ তা দেখাতে পারেনি। তখনই বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ের আয়োজন করায় বাবা মো. আলাউদ্দীনকে আটক করা হয়। শিবপুরে আ. বাতেন নামের একজন বিবাহ রেজিস্টার আছেন যিনি নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে পিংকির বয়স বাড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি এমন অবৈধ কাজ আগেও অনেকবার করেছেন।
এর পরপরই শিবপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফ উল ইসলাম মৃধা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ইউএনও। সেখানে সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নেন বিবাহ রেজিস্টার আ. বাতেনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার যেহেতু আ. বাতেন শিবপুরের অনেকগুলো বাল্যবিবাহে সহযোগিতা করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায় জানান, মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় এই বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদ ছাড়া বয়স নির্ধারণের কোন সুযোগ নেই। বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে নোটারী পাবলিক অবৈধ এবং এক্ষেত্রে তাই হয়েছে। ওই বিবাহ রেজিস্টারকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মেয়ের বাবাকে মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হবে।
#