বিনোদন ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,সোমবার,৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সর্বোচ্চ সম্মাননা আজীবন সদস্যপদ পেলেন অঞ্জু ঘোষ। আজ (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে অঞ্জু ঘোষকে ঘিরে এফডিসিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর।
এ সময় তার পাশে অঞ্জু ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ অনেকেই। শুধু ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি সমিতির সভাপতি। তিনি এই সম্মাননার একটি চিঠি তুলে দেন অঞ্জু ঘোষের হাতে।
এ সময় সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যদের মধ্যে তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম স্তর আজীবন সদস্য, দ্বিতীয় স্তর পূর্ণ সদস্য এবং তৃতীয় হলো সহযোগী সদস্য। এ ক্ষেত্রে কিংবদন্তিতুল্য শিল্পীরাই সাধারণত আজীবন সদস্যপদ পেয়ে থাকেন। এটা হচ্ছে একজন শিল্পীর প্রতি সমিতির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রদর্শনের বিষয়।
এদিকে অঞ্জু ঘোষকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়া প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বললেন, ‘‘শিল্পী যেখানেই থাকুক, তিনি আমাদেরই। এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে আমি সেটাই বিশ্বাস করি। অঞ্জুদি গত ২২ বছর আমাদের চোখের সামনে না থাকলেও মনের মধ্যে ঠিকই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। কারণ, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’কে বাদ দিয়ে তো এই ইন্ডাস্ট্রি আমরা কল্পনাও করতে পারি না। তো দিদি ঢাকায় আসার পর থেকেই ভাবছিলাম তাঁকে কেমন করে সম্মান জানাই। প্রথমে ভাবলাম বড়সড় অনুষ্ঠান করি। পরে ভাবলাম উনাকে সমিতির পূর্ণ সদস্যপদ দেই। কাল সারা রাত এটা নিয়ে ছটফট করছিলাম। ঠিক মন ভরছিলো না। পরে সবাই মিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা উনাকে সর্বোচ্চ সম্মাননাটাই দিতে চাই। আজ সেটি দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
এদিকে সমিতির আজীবন সদস্যপদ পেয়ে আবেগাপ্লুত হলেন অঞ্জু ঘোষ। মনের কথাটা গুছিয়ে না বলতে পারলেও এটুকু বললেন আর্দ্রকণ্ঠে, ‘আপনারা জোসনাকে এতকাল মনে রাখবেন, এভাবে বরণ করে নেবেন, সত্যি ভাবিনি।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আমন্ত্রণে টানা ২২ বছর পর ৬ সেপ্টেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন অঞ্জু ঘোষ। আজ (৯ সেপ্টেম্বর) তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এফডিসিতে। কাল ১০ সেপ্টেম্বর তিনি আবার ফিরে যাবে কলকাতায়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে অঞ্জু ঘোষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোলানাথ অপেরার হয়ে যাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করতেন ও গান গাইতেন। ১৯৮২ সালে এফ কবীর চৌধুরী পরিচালিত ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এই ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল ছিল। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি। অঞ্জু বাণিজ্যিক ছবির তারকা হিসেবে যতটা সফল ছিলেন, সামাজিক ছবিতে ততটাই ব্যর্থ হন।
১৯৮৭ সালে অঞ্জু সর্বাধিক ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেন, মন্দা বাজারে যেগুলো ছিল সফল ছবি। তার অভিনীত ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ অবিশ্বাস্য রকমের ব্যবসা করে এবং সৃষ্টি করে নতুন রেকর্ড। ১৯৯১ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে নতুনদের আগমনে তিনি ব্যর্থ হতে থাকেন। এর কয়েক বছরের মাথায় তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে এবং কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে থাকেন। সর্বশেষ তিনি ভারতের বিশ্বভারতী অপেরার যাত্রাপালায় নিয়মিত অভিনয় করতেন।