আন্তর্জাতিক ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,রবিবার,৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮: চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোনও পদক্ষেপ না নেয়ায় ও সংকট সমাধান না করে ‘বিতর্কিত’ অবস্থান গ্রহণের জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’কে মালয়েশিয়া সরকার আর কোনও ধরনের সমর্থন কিংবা সহযোগিতা দেবে না।
রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তুরস্কের একটি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড.মাহাথির মোহাম্মদ এ ঘোষণা দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারটির বরাত দিয়ে স্টার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের যে বর্বর হামলা-নিপীড়ন চালিয়েছে তা বিশ্বের চোখে পরিষ্কার। এর পরই শান্তিতে নোবেল পাওয়া সু চি সংকট সমাধানে ইতিবাচক কোনও ভূমিকাই রাখছেন না। উল্টো রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি’র ভূমিকাতে তাকে ‘বদলে যাওয়া একজন মানুষ’ হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন মাহাথির মোহাম্মদ।
মাহাথির বলেন, ‘সু চি’র এখন একজন ‘বদলে যাওয়া মানুষ’। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাদের নিপীড়ন নিয়ে সু চি এখনও কোনও কথাই বলছেন না। সুতরাং এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, আমরা আর তাকে কোনও ধরনের সমর্থন দেবো না।’
এমন পরিস্থিতিতে সু চি’র ওপর মাহাথির আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন বলেও সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি’কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড.মাহাথির মোহাম্মদ। কিন্তু সু চি’র পক্ষ থেকে কোনও ধরনের উত্তর না পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরাও আমাদের দেশে কিছু রোহিঙ্গাদের স্থান দিয়েছি। আমরা বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছি। মিয়ানমারকে আমরা আর কোনও ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি নই।’
এদিকে চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নেতিবাচক ভূমিকার জন্য গত শুক্রবার অং সান সু চি’কে দেয়া সম্মানসূচক নাগরিকত্ব বাতিল করেছে কানাডা। সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহল থেকে তাকে দেয়া নোবেল পুরস্কার বাতিলেরও দাবি জানানো হচ্ছে।
২০১৭ সালের আগস্টে সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার অভিযোগ তুলে রাখাইনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু করে মিয়ানমারের সেনারা। এর পর ওই বছরের ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী কয়েক মাস ব্যাপী সাগর ও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেয় অন্তত ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা। এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত থাকলেও মিয়ানমার সরকার ‘একগুয়ে’ অবস্থান থেকে সরে আসছে না।