স্পোর্টস ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন, বৃহস্পতিবার,২৫ অক্টোবর ২০১৮:
কার্তিকের কুয়াশা তখন চট্টগ্রামের আকাশটাকে কিছুটা ঘিরে ধরেছে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসা দর্শকরাও সেই কুয়াশার মৃদু চাদর গায়ে জড়িয়ে সিরিজ জয়ের অপেক্ষায়। মুশফিক-মিঠুনের ক্লিয়ার ফিনিশিং সেই অপেক্ষাটাও ঘুচালো শান্তশিষ্ট ভঙ্গিতেই। অনেকটা সাদামাঠাভাবেই। কারণ, প্রতিপক্ষের নাম যে জিম্বাবুয়ে।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছে মাশরাফি বাহিনী। প্রথম ওয়ানডেতে ২৮ রানের জয়ের পর দ্বিতীয় ওয়ানতে ৭ উইকেটের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
অবশ্য জিম্বাবুয়ের দেয়া ২৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচটাকে অনেকটাই একপেশে বানিয়ে দিয়েছিলেন দুই অপেনার ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। দুজনে মিলে ১৪৮ রানের জুটিটা যখন গড়ে ফেলেছেন তখন আর এই ম্যাচে কীইবা অবশিষ্ট থাকে। জিম্বাবুয়ের জন্য সান্ত্বনার ৩টি উইকেটই হয়তো অবশিষ্ট ছিল।
দলীয় ১৪৮ রানে সিকান্দার রাজার করা ২৪তম ওভারের শেষ বলে কাভারে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরেছিলেন ৮৩ রান করা লিটন। ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ৭৭ বলে এই রান করেন ডানহাতি এই অপেনার।
লিটন দাস আউট হওয়ার পর ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি গড়তে ক্রিজে এসেছিলেন অভিষেক ম্যাচে শূণ্য রানে আউট হওয়া ফজলে মাহমুদ রাব্বি। রাব্বির সামনে নিজেকে প্রমাণ করার দারুণ সুযোগ থাকলেও আগের ম্যাচের মতোই শূণ্য রানে ফিরেন তিনি।
এর পর ইমরুল-মুশফিকের পার্টনারশিপটা বেশ জমে উঠেছিল। ইমরুলের ব্যক্তিগত রান তখন ৯০। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে হঠাৎ সিকান্দার রাজার বলটি মিড উইকেটের উপর দিকে চালাতে গিয়ে চিগাম্বুরার হাতে তালুবন্দি হন ইমরুল। আরও একটি সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন আগের ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রান করা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
তবে ম্যাচটাকে সামান্য ঝুঁকির দিকেও যেতে দেননি অভিজ্ঞ ক্যাম্পেইনার মুশফিকুর রহিম। তার ৫২ বলে ৪০ রানের ঠান্ডা মাথার অপরাজিত ইনিংসটি, সঙ্গে মিঠুনের অপরাজিত ২৪ রান দলকে নির্বিঘ্নে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে একাই ৩টি উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজা।
এর আগে বুধবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টেইলর, উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজদের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশকে ২৪৭ রানের লক্ষ্য দেয় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন টেইলর। এছাড়া শেন উইলিয়ামস ৪৭ ও সিকান্দার রাজার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৯ রান।
টাইগার বোলারদের মধ্যে ১০ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এছাড়া মাশরাফি, মোস্তাফিজ, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ নেন একটি করে উইকেট।
এদিকে এ জয়ের ফলে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মাশরাফির দল। আগামী শুক্রবার সিরিজের শেষ ম্যাচটি জিতে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে আরও একবার হোয়াইটওয়াশের বিস্বাদ নিশ্চয়ই উপহার দিতে চাইবে স্টিভ রোডসের শিষ্যরা।