লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন, বুধবার ৩১ অক্টোবর ২০১৮: নরসিংদীর পলাশের গজারিয়া ইউনিয়নে ৪র্থ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে গত রোববার রাতে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ৩৫ বছরের এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকায় আপসের চেষ্টা করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। এই ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইউপি সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেছেন ওই স্কুলছাত্রীর মা।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, গজারিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আলতাফ হোসেন, অভিযুক্ত ধর্ষক জয়নাল হোসেন ও তার চাচাতো ভাই বারেক মিয়া ।
এজাহার বলছে, সোমবার রাতে ওই স্কুলছাত্রী তার দাদীর ঘর থেকে বেরিয়ে নিজেদের ঘরে যাওয়ার সময় প্রতিবেশী মনা মিয়ার ছেলে জয়নাল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক তার পথ আটকায়। তারপর মেয়েটির মুখ চেপে ধরে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি ঝুপে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ওই ঝুপে ফেলে রেখেই সে চলে যায়। মেয়েটির পরিবারের লোকজন বাড়ির পাশের ওই নির্জন ঝুপ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর মা জানান, মেয়েকে উদ্ধার করার পর তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন ও জয়নালের চাচতো ভাই বারেক মিয়াকে ধর্ষণের ঘটনা জানানো হয়। সেসময় বারেক মিয়া থানায় মামলা করতে বাধা দেন। তখন তিনি বলেন, থানায় মামলা করলে হয় প্রাণে মেরে ফেলা হবে, নয়তো এলাকাছাড়া করা হবে। অন্যদিকে ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন থানায় মামলা না করার জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে চেয়েছিলেন। তারা আপসের কথা বললেও আমরা রাজী হইনি তাই উপযুক্ত বিচারের আশায় থানায় গিয়ে ইউপি সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
জানতে চাইলে গজারিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আলতাফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আমার কাছে দুই পক্ষই এসেছিল। আমি তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করি। কিন্তু টাকার বিনিময়ে আপস করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি।
পলাশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তাফা প্রথম আলোকে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় ও আইনি সহায়তা নিতে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে তিনজনের কাউকেই এখনো খুঁজে পায়নি পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।