নিজস্ব প্রতিবেদক,নরসিংদী প্রতিদিন,শনিবার,২৪ নভেম্বর ২০১৮: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর দড়িপাড়া এলাকায় এক গৃহবধূরর বাম চোখ উপরে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) রাতে ছাগল চুরির প্রতিবাদ করায় নাজমা বেগম (৩৬) নামের এ গৃহবধূর চোখ উপরে নেয়া হয়। নাজমা বেগম একই এলাকার মতিন মিয়ার স্ত্রী।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা আব্বাস আলী বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
গৃহবধূর বাবা আব্বাস আলী জানাস, গত মঙ্গলবার(২০ নভেম্বর) গৃহবধূ নাজমা বেগমের একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যায় স্থানীয় যুবক মাহফুজ মিয়া ও তার ভাই মোরশেদ মিয়া, লুৎফর রহমান, সুজন মিয়া, শরীফ আহমেদ, ইমন ও হৃদয় নামের কয়েকজন। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনার জানাজানি হলে নাজমা বেগমের পরিবারের লোকজনসহ সজিব নামের এক আত্মীয় অভিযুক্ত হৃদয় মিয়াকে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে বকাঝকা করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিনই রাত আটটার দিকে সজিব মিয়া তার নিজ বাড়ি ইটাখোলা ফেরার পথে অভিযুক্তরা প্রথমে তার গতিরোধ করে। পরে এলোপাথারি মারধোর শুরু করলে চিৎকার শুনে নাজমা বেগম এগিয়ে যান। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে মোরশেদ মিয়া ছুরি দিয়ে নাজমা বেগমের বাম চোখে আঘাত করে চোখ উপরে ফেলে। পরে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে নাজমা বেগমকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে বাড়ি আনা হয়।
এ সময় ভোক্তভোগী নাজমা বেগম বলেন, তারা আমার ছাগল চুরি করে খেয়ে ফেলেছে। আবার প্রতিবাদ করায় আমার চোখ তুলে নিয়েছে।
গৃহবধূর স্বামী মতিন মিয়া বলেন, এই সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে। তারা এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। তাই তাদের কোনো অপরাধের বিচার হয় না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে উল্টো তাকেই হয়রানি হতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাশার খান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস ও বর্বর। আমি এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছাগল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারি হয়েছে। ওই ঘটনায় নাজমা আক্তারের চোখে জখম হয়েছে। এ ঘটনায় ভোক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।