নিউজ ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বৃহস্পতিবার,২০ ডিসেম্বর ২০১৮
সাভার ও আশুলিয়ায় বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখে রাস্তায় বের হয়ে আসে। ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে আশপাশের কারখানায়। পরিস্থিতিন নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এঘটনায় তিন পুলিশসহ ২০ শ্রমিক আহত হয়েছে।
সাভার থানা পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে বেতন বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। এসময় আশেপাশের বিভিন্ন কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায়। পুলিশ শ্রমিকদেরকে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পুলিশসহ ২০ শ্রমিক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় অর্ধশতাধিক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুর বাগবাড়ি এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের সামস স্টাইলিং ওয়্যারস লিমিটেড ও টিসিএল-২ এর প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কারখানায় প্রবেশের পর মজুরি কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করতে থাকে। এঘটনায় মালিকপক্ষ ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা তাদেরকে বুঝিয়ে কাজে যোগদান করার কথা বললে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে হেমায়েতপুর-কেরানীগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেয়।
পরে শ্রমিকদের কয়েকটি গ্রুপ ভাগ হয়ে ডার্ড গ্রুপ, পলো গার্মেন্টস, একেএইচ গ্রুপ, আমান নিটিংসহ আশপাশের কারখানাগুলোতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় কর্তৃপক্ষ শ্রমিক বিক্ষোভের বিষয়টি বুঝতে পেরে কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন কারখানা থেকে বের হয়ে আসা প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক মজুরী পুনঃনির্ধারণের দাবিতে হেমায়েতপুর-সিংগাইর ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অবস্থান নেয়। এ সময় মহাসড়কে যান চলাচলা বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ শ্রমিকদেরকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনায় ৩ পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হয়। পুলিশ জলকামান ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
এর আগে বুধবার দুপুরে একই দাবিতে আন্দোলনরত স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ ও ডার্ড গ্রুপের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।
অন্যদিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার এ.আর.জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড এবং মেট্রো নিটিং এন্ড ডাইং মিলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরাও মজুরী বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।
শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক সানা শানিনুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিকরা না বুঝে বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন কারখানায় বিক্ষোভ করেছে। এসময় আমরা অনেক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদেরকে পুরো বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তারা শান্ত হয়ে কাজে যোগদান করে। কিন্তু কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক তাদের অযৌক্তিক দাবিতে অনড় থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। এসময় বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। লাঠিচার্জ ও জলকামানের সাহায্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটির পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া যো কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জলকামান, সাঁজোয়াজান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
খবর: দেশ রুপান্তর