নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শনিবার,২২ ডিসেম্বর ২০১৮:
নরসিংদী-৩ আসনের শিবপুরে বিএনপি’র প্রার্থী মনজুর এলাহীর নির্বাচনী অফিসে আওয়ামী লীগের অতর্কিত হামলায়, গাড়ী ভাংচুর, গুলিবিদ্ধ -১, আহত-৫ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। শনিবার(২২ ডিসেম্বর) বেলা ১টা দিকে শিবপুর ধীমান মার্কেট এর সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে মাহদীয়া (৮) নামে এক এতিম শিশু। সে শিবপুর দারুল উলুম ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
গুরুতর আহত অবস্থায় মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে জেলা হাসপাতালে পেরণ করেন। বর্তমানে সে জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছে। মাহদীয়া শিবপুর বিলশরণ এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের মেয়ে।
শিবপুর দারুল উলুম ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মো: তাছলিম উদ্দিন নরসিংদী প্রতিদিনকে জানান, হামলার সময় সে ক্লাস থেকে বারান্দায় দিয়ে অন্য ক্লাসে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, দুপুরে ৪টি গাড়ীযোগে এসে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী অতর্কিতে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায়। এসময় এলেপাথারিভাবে গুলি ছুড়ে আতংক সৃষ্টি করলে স্থানীয়রা পালাতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রার্থীর কার্যালয়ে সামনে রাখা ২২টি মোটরসাইকেল, গাড়ী ভাংচুর ও অফিসের ভেতরে ভাংচুর করা হয়। এসময় কার্যালয়ের পাশে থাকা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
শিবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হারিছ রিকাবদার বলেন, সকালে নির্বাচনী প্রচারনার জন্য প্রার্থীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা অফিসে জড়ো হন। এসময় নৌকার সমর্থকরা নৌকার স্লোগান দিয়ে অতর্কিতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা চালানো হলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। হামলার সময় আমাদের দলীয় প্রার্থী সেখানে ছিলেন না।
যোগাযোগ করা হলে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। হামলাকারীরা যে দলেরই হোক না কেন তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুল হক মোহনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে পরে ফোন দেয়ার জন্য বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম রাখিল বলেন, শিবপুর বিএনপি এখন ৪টি গ্রুপে বিভক্ত। তারা তাদের প্রার্থী বহিরাগত বলে মেনে নিতে পারছে না। নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। নৌকার ওপর দোষ চাপানোর জন্য তারা নৌকার স্লোগান দিয়ে হামলা করে থাকতে পারে।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলাকারীরা যে দলেরই হোক না কেন গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।