1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
  6. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
  7. wpapitest@config.com : wpapitest :
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

শতাধিক ‘সিসা’ বারে প্রাচীন রাজাদের হুক্কার ধোঁয়া

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ৩৬৭ পাঠক

অনলাইন ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শুক্রবার,১৮ জানুয়ারি ২০১৯:
রাজধানীর ফাইভস্টার হোটেলসহ গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডির অভিজাত এলাকায় শতাধিক সিসাবার রয়েছে। সমাজের বিত্তবান ঘরের ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে এসব বারে হাজির হয়ে সিসার ধোঁয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে।

 

সিসা মাদক তালিকায় না থাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অবস্থান গ্রহণ করতে পারেনি। মাদকের নতুন আইনে ‘সিসা’কে মাদক হিসেবে নথিভুক্ত করায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় দুটি ‘সিসা’ বারে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আল আমিন হোসেন (২১), মো. সুমন হাওলদার (২৬) ও মো. সোহাগ হোসেন (২০)। এদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশে ‘সিসা’ নামক মাদকের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা বলে জানা গেছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষায় ‘সিসা’য় মাদকের উপাদান পাওয়া না গেলেও এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

‘সিসা’য় প্রতি সেশনে বের হওয়া ধোঁয়ার পরিমাণ ১০০টি সিগারেটের সমান। এর মধ্যে উচ্চমাত্রার টক্সিন, কার্বন মনো-অক্সাইড হেভি মেটালসহ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান থাকে।

এতে নিকোটিনের পরিমাণও সিগারেটের দ্বিগুণ। ‘সিসা’য় আসক্ত হয়ে অনেকেই ইয়াবা হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকসেবী হয়ে উঠছে। সিসায় ব্যবহার করা উপাদান টেট্রা-হাইড্রোক্যানাবিনল হাসিসের নির্যাস থেকে রাসায়নিক মিশ্রণে তৈরি হয়। আর ১২০ কেজি হাসিস থেকে হয় এক কেজি টেট্রা-হাইড্রোক্যানাবিনল।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের উপপরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা জানান, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিতে শতাধিক সিসাবার গড়ে উঠেছিল। সিসা মাদকের তালিকায় না থানায় বারগুলোর বিরুদ্ধে আমরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। সেখানে সিসা খাচ্ছে এমন অবস্থায় বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর এগুলোর কেমিক্যাল টেস্ট করিয়েছি। টেস্টে তিনটি ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। যা মানুষের দেহের জন্য মাদকের চেয়েও বেশি ক্ষতিকারক।

তিনি আরও জানান, সিসাকে মাদক হিসেবে আইন হওয়ার পর আমরা ফাইভস্টার হোটেলসহ রাজধানীর সকল সিসাবারে গিয়ে নিষেধ করেছি। আর দুটি বারে অভিযানের পর বারের মালিকগণ বন্ধ করেছে বলে শুনেছি। তার পরও আমরা এসব বারের মালিকদের মানা করেছি। আর স্টিকার লাগিয়ে দিয়েছি। তারপরও আমাদের লোকজনকে নজরদাবিতে রেখেছি। যদি কোথাও কোনো সিসার তথ্য পাই, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র জনায়, সিসাবারের মালিকগণ এর আগে উচ্চ আদালতে রিট করেছিল। এরপর উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছিল, সিসার ওপর অভিযান চলতে পারে যদি এতে মাদকদ্রব্য জাতীয় কিছু মিশ্রিত থাকে। সে ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করা যাবে। আর যদি কোনো মাদকের অস্তিত্ব না থাকে সে ক্ষেত্রে আমরা আইন প্রয়োগ করতে পারিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সিসাবার দেখতে খাবারের দোকান বলেই মনে হবে। আর খাবারের দোকান বোঝাতে রাখাও থাকে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। সিসাবারের জন্য কোনো লাইসেন্স লাগে না। সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স থাকলেই চলে। অনেক দোকানে তাও নেই। সিসাবারের খদ্দের সিসায় আসক্ত সিংহভাগই বিত্তবান পরিবারের সন্তান। এদের মধ্যে রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, উঠতি ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার তরুণ-তরুণী ও যুবসমাজ। প্রথমে এক ধরনের অ্যাডভেঞ্চার থেকে সিসা গ্রহণ করলেও পরবর্তী সময়ে এরা ইয়াবা, ফেনসিডিল, হোরোইনে আসক্ত হয়ে পড়ছে। শীতের সময়টাতেই সিসাবারে বেশি ভিড় থাকে।

নতুন মাদক সিসা প্রাচীনকালের হুকার নগর সংস্করণ। নিকোটিনের প্রভাব থেকে রেহাই পেতে হুকার উদ্ভব হয়েছিল। এখন সেই হুকাকে ব্যবহার করা হচ্ছে সিসার নিকোটিনকে ভিন্নভাবে উপভোগের কাজে। বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হুক্কা বা সিসা। তামাক ও আফিমের সঙ্গে কথিত ফলের নির্যাস মিলিয়ে হুক্কা টানা হয়। সিগারেটের চেয়ে বহুগুণ বেশি ক্ষতিকর এই সিসা। সিসা ব্যবহারকারীদের অধিকাংশের বয়স ২৫ বছরের নিচে। এরা হুকার পাইপ একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ধূমপান করে। পানির মধ্য দিয়ে তামাকের ধোঁয়া সেই পাইপ দিয়ে টেনে নেওয়া হয়। সিগারেটের চেযে এই হুকা ২.৫ গুণ বেশি পরিমাণ নিকোটিন, ১০ গুণ বেশি কার্বন মনোক্সইড, ২৫ গুণ বেশি টার এবং ১২৫ গুণ বেশি ধোঁয়া সরবরাহ করে। একবার সিসা গ্রহণে যে পরিমাণ নিকোটিন দেহে প্রবেশ করে তা ১০০টি সিগারেটের সমপরিমাণ। গুলশানে সিসার দাম স্বাদভেদে পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকা। এ কারণে অনেকে দল বেঁধে এসে সিসা সেবন করেন। এতে খরচও কম পড়ে। এসব বারে বিভিন্ন ফ্লেভারে সিসা পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে-লিমোরা ডিলাইট, পান সালসা, অরেঞ্জ কাউন্টি, ওয়াইল্ড মিন্ট, কিউই, ট্রিডল আপেল, চকোলাভা, ক্রেজিকোয়ারি, ব্লুবেরিস।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিসাবারে প্রবেশ না করলে বোঝা যাবে না, ভেতরের চিত্রটা কেমন। দরজা খুললে পাওয়া যাবে মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ। চারদিকে জ্বলছে লাল-নীল রঙের ডিমলাইট। চারপাশ ধোঁয়ায় ভরা। মিউজিক প্লেয়ারে হালকা ভলিউমে বাজছে ইংরেজি গান। পরিপাটি টেবিল ঘিরে সোফায় বসে আড্ডায় মশগুল ৪ থেকে ৭ জন করে তরুণ-তরুণীর একাধিক গ্রুপ। তাদের সামনে একটি করে বিশেষ ধরনের রাজকীয় হুক্কা। আরও আছে কাচের রিজার্ভ কক্ষ। চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা। একজনে হুক্কার নলে টান দিয়ে অন্যের হাতে তুলে দেয়। এভাবেই চলে হুক্কার নল টানাটানি।

রাজধানীতে গত ৫ বছরে সিসাআসক্ত বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার সিসাসেবী রাজধানীতে রয়েছে বলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে।

অপর সূত্র জানায়, রাজধানীর যেখানে-সেখানে সিসাবার স্থাপনের মাধ্যমে নেশার বিস্তার ঘটিয়েছে। সিসার বারগুলো কেবলই ‘নেশার ধোঁয়া’ সেবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না, সেগুলো হয়ে উঠছে তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশাসহ অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়াস্থল। পাশাপাশি সিসার হুকায় ইয়াবা ও গাঁজার সংমিশ্রণ ঘটিয়েও নেশাকে তীব্র রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে অহরহ। এসব সিসার বারে কিশোর-কিশোরীদের উদ্বেগজনক ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে।

এধরনের সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট সিসার বারগুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের সিসার ধোঁয়ায় বুঁদ হয়ে থাকতে দেখে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেটও অবাক হয়ে যান। সেসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কিশোর-কিশোরীদের অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে ‘সন্তান ভবিষ্যতে আর সিসার বারে যাবে না’ মর্মে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। গুলশানে ‘ফুড অ্যান্ড লাউঞ্জ’ নামের সিসার বারের নিচতলা পর্যন্ত পৌঁছেও উপরের তলায় কী হচ্ছে তার কিছুই বোঝার উপায় নেই। ওই সিসাবারের নিচতলায় জুসবার। দ্বিতীয় তলায় ফাস্টফুডের ব্যবস্থা দেখা গেছে। আর দোতলা থেকে ছোট ছোট সিঁড়ি দিয়ে উপরে গেলেই আলো-আঁধারির পরিবেশ। তবে নতুন আইন হওয়ার পর সিসার বারটি বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে রাজধানীর গুলশানের ‘দ্য মিরাজ’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট ও সিসাবারে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া সিসাবার পরিচালনার জন্য রেস্টুরেন্টটি সিলগালা করা হয়েছিল।

গত ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের একটি সিসাবারে প্রতিষ্ঠানটির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে লএইচএফ ফুড অ্যান্ড লাউঞ্জ। আর বারের মালিক মোস্তফা ওয়ালিদ হোসেন। তিনি সুইডেনের নাগরিক বলে জানা গেছে। এলএইচঅ্যাফ ফুড অ্যান্ড লাউঞ্জের নিচতলার সিঁড়ি থেকেই সিসার ঝাঁঝাঁলো গন্ধ বের হতো।

উল্লেখ্য, ব্যক্তির ধানমন্ডির ৭ নম্বরে ‘এইচ-টু-ও’ লাউঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তর অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ সিসাসহ তিন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. আল আমিন হোসেন (২১), মো. সুমন হাওলদার (২৬) ও মো. সোহাগ হোসেন (২০)। উক্ত এইচ-টু-ও লাউঞ্জ থেকে ৭৫০ গ্রাম সিসা ও চার সেট হুক্কা জাতীয় মেশিন উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ধানমন্ডি মডেল থানায় রোববার ৫ নম্বর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শনিবার গভীর রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম আকস্মিকভাবে এ অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত ব্যক্তিদের আটক করে। আর এই বিষয়টি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ খোরশিদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ধানমন্ডি ৭/এ রোডের এইচ-টু-ও লাউঞ্জে নিষিদ্ধ মাদক সিসাবারে অভিযান চালানো হয়। নতুন আইনে সিসাকে মাদকদ্রব্যের ‘খ’ শ্রেণির তালিকায় রেখে সিসার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সিসা অর্থ বিভিন্ন ধরনের ভেষজের নির্যাস সহযোগে ০.২ শতাংশে ঊর্ধ্বে নিকোটিন এবং এসেন্স ক্যারামেল মিশ্রিত ফ্রুট স্লুইস সহযোগে তৈরি যেকোনো পদার্থ। নতুন মাদক আইনে সিসার পরিমাণের ওপর তিন ধরনের শাস্তির (ন্যূনতম এক বছরের দ- থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর) বিধান রাখা হয়েছে।

খবর: আমার সংবাদ / প্রিন্ট সংস্করণ॥আব্দুল লতিফ রানা | ০১:২৫, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯:



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD