অনলাইন ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শনিবার,১৯ জানুয়ারি ২০১৯:
সাতক্ষীরার কেঁড়াগাছিতে দুই লম্পট যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এই বখাটেরা কম্পিউটারের মাধ্যমে বড় বোনের নগ্ন ছবি তৈরি করে ছোট বোনকে বিয়ে প্রস্তাব দেয়। ঘটনাটি উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বাকসা গ্রামে ঘটে।
নিরুপায় হয়ে ভিকটিমের বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বেলেডাঙ্গা বাজারের হক সাহেবের চাতাল থেকে অভিযুক্ত দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।
আটককৃত যুবক একই এলাকার বাকসা গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেল সাইফুল ইসলাম বাপ্পা (২৫) ও কাকডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুল ইসলামের ছেলে ইমরান সিদ্দিকী জুয়েল (২৪)।
ভিকটিমের বাবা আব্দুল আলীম জানান, ঢাকা ইডেন কলেজের ফাইনাল ইয়ারে পড়া বড় মেয়ের ছবি (ভিকটিমের) ইচ্ছাকৃতভাবে কম্পিউটারে এডিট করে নগ্ন ছবি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে লম্পট যুবকরা তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে বিরক্ত করে আসছিল।
মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্লাকমেইল করতে থাকে অভিযুক্তরা। মেয়েকে এসব বিষয়ে কারোর সাথে না বলতে নিষেধ করলে তারা প্রতিদান হিসেবে ভিকটিমের ছোট বোনকে তাদের (বাপ্পার) সাথে বিয়ে দেওয়ার শর্ত দেয়।
ছেট বোন স্থানীয় বোয়ালিয়া মুক্তিযুদ্ধা কলেজের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তা না হলে কম্পিউটারে তৈরি করা (নগ্ন ছবি) ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
মেয়ে লম্পটদের কবল থেকে বাঁচতে বিষয়টি তার বাবাসহ পরিবারকে জানায়। মেয়ের বাবা ঘটনা জানতে পেরে অভিযুক্তদের কাছে বিষয়টি ধামাচাপা রাখতে বলেন। কিন্তু তারা মেয়ের বাবার কাছে ৫ লাখ টাকা চায়। যদি টাকা দেয়া না হয় তাহলে ছোট মেয়েকে বিয়ে করবে বলে দাবি করেন বাপ্পা। এরপর তাদের দাবি যদি মানা না হয় তাহলে তারা বড় মেয়ের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখাতে থাকেন।
মেয়ের বাবা তাদেরকে টাকা দিতে বা মেয়েকে বিয়ে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অভিযুক্তরা মেয়ের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মেয়ের নামে থাকা ঐ ফেসবুক আইডি (মেসেঞ্জার) থেকে বিভিন্ন বন্ধুদের কাছে নগ্ন ছবি ভাইরাল করতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) ভাইরাল হওয়া মেয়ের নগ্ন ছবি দেখে মেয়ের বাবা কলারোয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে তদন্ত করতে মাঠে নামে থানা পুলিশ। তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আটক করা হয়।
কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক জেল্লাল হোসেন জানান, তথ্য প্রযুক্তি আইন- ২০১৮ অনুযায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নগ্ন ছবি ভাইরাল করার অপরাধে অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা আব্দুল আলীম বাদী হয় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে সেটা তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলায় রুজু করা হয়। আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।