নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
সোমবার,২১ জানুয়ারি ২০১৯:
সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস না পেরুতেই শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড়। সংসদ নির্বাচন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের টিকিট পেতে তদবির শুরু করেছেন বিভিন্ন স্তরের নেতারা। দলীয় নেতাদের পাশাপাশি সরাসরি রাজনীতি না করা ‘হাইব্রিড’ নেতারাও আছেন এ দৌড়ে।
মার্চে অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এখন পর্যন্ত কোনো ঘোষণা না দিলেও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগে। প্রায় প্রতিটি উপজেলায় দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৮ থেকে ১০ জন। বিভিন্ন স্থানে একই পরিবারের একাধিক সদস্যও মনোনয়ন পেতে চালাচ্ছেন প্রচারণা। এরই মধ্যে স্থানীয় নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন কেন্দ্রের প্রভাবশালী নেতাদের দপ্তরে। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিতরা অবস্থান টিকিয়ে রাখতে উপজেলা নির্বাচনে লড়তে চান।
বেশিরভাগ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মনে করছেন, মনোনয়ন পেলেই নিশ্চিত বিজয়। এ ভাবনা থেকেই ত্যাগী নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তদবির শুরু করেছেন এলাকায় নেতাকর্মীদের কাছে অপরিচিত ‘হাইব্রিড’ নেতারাও।
এদিকে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দুঃসময়ে দলে অবদান রাখা তৃণমূল নেতাদের মধ্যে। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের গণজোয়ার দেখে বসন্তের কোকিলরা ভিড় জমাচ্ছেন। সম্প্রতি সংরক্ষিত নারী আসনে অভিনেত্রীসহ অপরিচিত মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অধিক আনাগোনায় এ ক্ষোভ সামনে এসেছে।
সম্প্রতি সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) দেওয়া এক তথ্যে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শপথ নেওয়া সংসদ সদস্যদের ১৮২ জনই পেশায় ব্যবসায়ী। সমালোচকদের মতে, ব্যবসায়ীদের আধিক্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্যাগী রাজনীতিবিদরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোতে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় দেশে নির্বাচনের সময় এলেই নতুন মুখের দেখা মেলে। তারা নানা তদবিরে মনোনয়ন ভাগিয়ে নিয়ে যান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর খোলা কাগজকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে, স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। দলীয় মনোনয়ন বোর্ড এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
দলীয় প্রতীকে হতে যাওয়া এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ফেব্রুয়ারিতে। আর ভোটগ্রহণ হতে পারে মার্চ থেকে কয়েক ধাপে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে ইসির। চলতি মাস থেকেই এ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হতে পারে।