নিউজ ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
সোমবার,১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯:
শনিবার রাত আড়াইটা। পটুয়াখালী থেকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ এক নারীর ফোন। ফোনে জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকা তার আপন ভাই আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। বাসার ঠিকানা বুঝে নিয়ে এরপর মাত্র ৭ মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর চেষ্টায় ওই যুবককে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ সদস্যরা।
নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ সূত্র জানায়, শনিবার গভীর রাতে ৯৯৯ এ পটুয়াখালী থেকে ফোন করেন এক নারী। তিনি জানান, তার ভাই আসিফ খান (ছদ্মনাম) মোহাম্মদপুরের ১ নম্বর সড়কের একটি বাসায় থাকেন। তাকে ফোন করে জানানো হয়, আসিফ খান আত্মহত্যা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাত ২টা ২৬ মিনিটে মোহাম্মদপুর থানার সংশ্লিষ্ট টহল টিমকে জানায় ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ। তখন ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে পুলিশের টিমের অবস্থান। খবর পেয়ে মাত্র ৭ মিনিটে ঝড়োবেগে ছুটে যান ওই বাসায়। ২টা ৩৩ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। উদ্ধার করে আসিফ খানকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ডগ ট্রেইনার হিসেবে ঢাকায় কাজ করেন আসিফ খান। স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মোহাম্মদপুরের ওই বাসায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসিফ পুলিশকে জানায়, জীবনে কাঙ্ক্ষিত সফলতায় ব্যর্থ হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয়ার মনোস্থির করেন তিনি। রাতভর থানা পুলিশের কর্মকর্তারা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, আত্মহত্যা কোনো সমাধান না। আত্মহননের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাকে।
পরে পটুয়াখালী থেকে ওই ব্যক্তির বোন ও দুলাভাই ঢাকায় এলে রবিবার দুপুরে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় আসিফকে।
জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিরাজুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ওই ব্যক্তি পুলিশকে আশ্বস্ত করেছেন, তিনি আর আত্মহত্যার চেষ্টা করবেন না। এমন অনেক কাজের মাধ্যমে এই সেবাটি মানুষের আস্থা অর্জন করে নিয়েছে ইতিমধ্যে। ৯৯৯ স্বল্পতম সময়ে সাড়া দিতে প্রস্তুত থাকে সব সময়।
৯৯৯ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কার্যক্রম শুরুর পর থেকে গত এক বছরে প্রায় ৭৭ লাখ কল এসেছে জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ। প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৮ হাজার কল আসে ৯৯৯-এ।
পুলিশ জানিয়েছে, কেউ আত্মহত্যা করতে চাইলে পেনাল কোডের ৩০৯ ধারা অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের দণ্ড হিসেবে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে। মোহাম্মদপুর থানার একজন কর্মকর্তা জানান, এক্ষেত্রে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করতে পারতো। কিন্তু মানবিক কারণে তা করা হয়নি।